মানবতার রাজনীতি ছাড়া মুক্তি নেই,’আল্লামা ইমাম হায়াত

IMG-20251011-WA0000

আহমদ রেজা,চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান:

আজ ঢাকার গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশ প্রস্তুতি সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি আল্লামা ইমাম হায়াত বলেন, “মানবজীবনের সকল দুর্দশা, সংকট, খুন ও জুলুমের মূলে একক গোষ্ঠীবাদি রাজনীতি ও রাষ্ট্র নিহিত আছে। তাই মুক্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো মানবতার রাজনীতি ও মানবতার ওপর ভিত্তি করে একটি সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্র গঠন।”

সমাবেশে আল্লামা ইমাম হায়াত বলেন, ইনসানিয়াতের রাজনীতি ও রাষ্ট্র হবে সব মানুষের কল্যাণের জন্য — কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধ নয়। তিনি বলেছিলেন, “রাজনৈতিক দল হতে হবে সকল মানুষের ভালোবাসা ও প্রতিনিধিত্বশীল; সকল ধর্মের মানবিক স্বার্থের রক্ষক। মিথ্যা, অত্যাচার, রাষ্ট্র জবরদখল, খুন-সন্ত্রাস ও লুটপাটের বিরুদ্ধে সংগ্রামই হল প্রকৃত মানবতার রাজনীতি।”

তিনি আরও বলেন, যেখানে মানবতার রাজনীতি নেই সেখানে সত্য, জীবন ও মানবাধিকার মৃত — সেখানে কেবল মিথ্যা ও জুলুমের একক আধিপত্য দেখা যায়। মানবিক সাম্যের ওপর ভিত্তি করে শান্তিপূর্ণ ও অখন্ড জীবন গড়াই হবে মানুষের একমাত্র রক্ষা-পথ, যোগ করেন তিনি।

আল্লামা ইমাম হায়াত সমাবসসে জনগণকে সতর্ক করে বলেছিলেন, “খুনিদের দল ঘৃণাভরে বর্জন করুন; খুনিদের দলে থাকলে আপনি নিজেও খুনের অংশীদার হবেন। ঈমানদার হতে চাইলে বস্তুভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ও গোষ্ঠীবাদ থেকে মুক্ত থাকতে হবে—মানবসত্তার ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে।”

সমাবেশে অনুষ্ঠানিক বক্তব্যে তিনি ভাষাগত পরিচয়, নাগরিকত্ব ও মূল আত্মপরিচয় (জাতীয়তা) এক নয় বলে উল্লেখ করে বলেন, “ঈমানী সত্তা ও বস্তুবাদি সত্তা পরস্পরবিরোধী; ভাষাগত ও গোত্রগত জাতীয়তাবাদ, রাষ্ট্রগত জাতীয়তাবাদ—এসবই বস্তুবাদি জাতীয়তাবাদের শাখা এবং এগুলো জীবনের সত্যের পরিপন্থী।” তিনি জীবন ও মানবতার বিরুদ্ধে কোনো ধর্ম নেই; বরং ধর্মের ছদ্মবেশে অনাচার হলে সেটিই অধর্মিতা বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেছিলেন, একক ধর্ম বা একক জাতিবাদী রাজনীতি ধর্ম ও রাষ্ট্র দুটোই ধ্বংস করে; তাই সব মানুষের জীবন, ধর্ম, স্বাধীনতা ও জীবিকা রক্ষায় সকলের প্রতিনিধিত্বশীল, নিরাপত্তা ও মর্যাদা-ভিত্তিক মানবতাবিধ রাষ্ট্র গড়াই সমাধান। ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সংগঠনের ঘোষণা অনুযায়ী—আগামী মহাসমাবেশে এসব নীতি-আদর্শকে সামনে রেখে অন্যতম কর্মসূচি ও ধারাবাহিক আন্দোলন ঘোষণা করা হবে, যাতে সমাজে গোষ্ঠীবাদী রাজনীতির প্রভাব কমিয়ে মানবতাবান রাষ্ট্র বিনির্মাণে জনসমর্থন ও উদ্যোগ গড়ে ওঠে।