আজমের দুই কোটি পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সোহাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে

বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন, বিশেষ প্রতিবেদক,
মালয়েশিয়া-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জাজিরা (এম) এসডিএন, বিএইচডি–র চেয়ারম্যান আজম (৫০) অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভরসার বাংলাদেশি সেলসম্যান মোঃ সোহাগ দীর্ঘকাল কাজের আস্থা ভাঙিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৬,৮৭,০০০ রিঙ্গিত (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২,০৫,৫০,০০০ টাকা) আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছে। ঘটনা জানার পর আজম মালয়েশিয়ার স্থানীয় থানায় একাধিক রিপোর্ট করেন এবং তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ আছে, কোম্পানির ক্লায়েন্ট ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিল সংগ্রহ–প্রক্রিয়ায় শর্তসাপেক্ষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকা সত্ত্বেও সোহাগ বিল গোপন করে নিজে উত্তোলন করে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ৮ বছর ধরে জাজিরার সেলসম্যান হিসেবে কাজ করছিলেন এবং ওই সময় বিশ্বস্ততা অর্জন করে প্রতারণার সুযোগ নিয়েছেন।
অভিযোগকারীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোঃ সোহাগের সহযোগী হিসেবে আরো এক প্রবাসী—শুভ মেহেদী হাসান (পাসপোর্ট নং- EJ0095787)–র নাম উঠে এসেছে। প্রাথমিকভাবে সোহাগের মা জয়নব বেগম কিছু অর্থ ফেরত দিয়েছেন; প্রথমে নগদ ২২,০০,০০০ টাকা এবং পরে ভুক্তভোগীর পরিবারের আরেক সদস্যকে ১০,০০,০০০ টাকা প্রদান করা হয়। তারপরও সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত না করে জয়নব বেগম বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকেন এবং যোগাযোগও বন্ধ করে দেন—এুলাই অভিযোগে বলা হয়েছে।
আজম অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, তিনি মালয়েশিয়ায় সিটিজেন হিসেবে বহু বছর ব্যবসা পরিচালনা করছেন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানে আনুমানিক ৭০—৮০ জন কর্মী কর্মরত। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে এই প্রতারণায় তিনি মানবিক ও আর্থিকভাবে গভীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অভিযোগ দায়েরের তারিখ ও মামলা রেকর্ডের নম্বরসমূহ মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট থানায় নথিভুক্ত আছে।
এই ঘটনায় মন্তব্য করতে গিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (আপিল বিভাগ)–এর সিনিয়র আইনজীবী ও হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির চেয়ারম্যান এডভোকেট সাঈদুল হক সাঈদ বলেন,
“আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি গম্ভীর। ভুক্তভোগীকে আইনী সহায়তা দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক লেনদেন ও প্রবাসী ব্যবসায়িক কার্যক্রমে এ ধরনের কেলেঙ্কারি রোধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপসহ আন্তর্জাতিক সমন্বয় জরুরি। প্রবাসী ও ব্যবসায়ীরা সদা সতর্ক থাকবেন।”
আইনি পরামর্শদাতা ও সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছেন, মালয়েশিয়ায় নিবন্ধিত সংস্থার বিরুদ্ধে এ ধরনের আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত হলে দ্রুত ইন্টারপোল বা দুই দেশের আইনগত সহযোগিতার মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। ভুক্তভোগীরা বাংলাদেশে কোর্ট-মীমাংসা ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল বিশ্লেষণের মাধ্যমে টাকা উদ্ধার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন।
সচেতন মহলও মনে করছে, বৈদেশিক পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা–প্রতিষ্ঠানকে আড়ায় করে অর্থ পাচার ও প্রতারণা হলে দেশের প্রবাসী ও ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই দেশ এবং প্রবাসী ব্যবসায়ীদের রক্ষা তথা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড দমন করতে কড়াকড়ি ও আন্তর্জাতিক সমন্বিত তদন্ত জরুরি।
ভুক্তভোগী আজম জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশের যথাসম্ভব আইনগত সহায়তা নেবেন এবং প্রয়োজন হলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সমন্বয় করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিস্তৃত মামলা করবেন।