উচ্চ আদালতের নির্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার ভবন উচ্ছেদ, হিন্দু সম্পত্তি উদ্ধার

মোঃ জানে আলম রনি(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরের প্রাণকেন্দ্র মসজিদ রোডে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসন ‘জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’সহ দুটি স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ করেছে। এ সময় অর্পিত সম্পত্তির আওতায় থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের বেদখল হয়ে থাকা ২৫ শতাংশ ভূমিও উদ্ধার করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে সহযোগিতা করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
প্রায় এক দশক ধরে চলা এই জমি নিয়ে মামলার সূত্রপাত ২০১২ সালে। লীলাময় ভট্টাচার্য নামের একজন ব্যক্তি দাবি করেন, জায়গাটি তার পৈতৃক সম্পত্তি। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালে আদালত তার পক্ষে রায় দেন। সরকারপক্ষ আপিল করলেও, ২০১৯ সালে উচ্চ আদালতের আপিল ট্রাইব্যুনালও মূল রায় বহাল রাখে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আইন অধিশাখা-৪ এর পরিপত্র এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইনের আওতায় রায়ের কার্যকারিতা নিশ্চিত হয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনের পক্ষে থাকা চেম্বার কর্তৃপক্ষসহ সকল দখলদারদের জায়গা খালি করার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উচ্চ আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো স্থগিতাদেশ না থাকায়, এ উচ্ছেদ আইনি বাধাহীনভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে চেম্বারে থাকা কিছু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, “আমাদেরকে কোনো নোটিশ না দিয়েই উচ্ছেদ করা হয়েছে। চেম্বার কর্তৃপক্ষও কিছু বলেনি।”
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাবীন জানান, “আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ীই আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। চেম্বার ও দোকান মালিকদের মালপত্র সরিয়ে নিতে সময় দেওয়া হয়েছিল।”
নির্মল ভট্টাচার্য, জমির মালিক ও মামলার বাদী বলেন, “এই জায়গাটি আমাদের পূর্বপুরুষের। নানা কারণে এটি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়। আমরা ২০১২ সালে মামলা করি এবং ২০১৮ সালে জয়লাভ করি। দীর্ঘ সময়ের আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমাদের পক্ষে রায় বাস্তবায়িত হয়েছে।”