কাশিয়ানীতে বিলুপ্তির গন্তব্যে মৃৎশিল্প

শেখ শোভন আহমেদ
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। আজ থেকে দশ বছর আগেও কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের শিবগাতি, মহেশপুর ও ব্যাসপুর গ্রামের প্রায় ৩০টি পরিবার মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত ছিল। তবে আজ এই ঐতিহ্যবাহী পেশার সাথে জড়িতদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে।
এখনো মৃৎশিল্পীদের জীবনযাত্রা মূলত মাটির হাড়ি, কলস, খেলনা, পিঠা তৈরির ছাঁচসহ গৃহস্থালি জিনিসপত্র তৈরির মাধ্যমে চলে। মাটির তৈরি জিনিসপত্র পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না হলেও, আধুনিক যুগে প্লাস্টিক ও সিরামিক পণ্যের আধিপত্যের কারণে মৃৎশিল্পের জনপ্রিয়তা দ্রুত কমে যাচ্ছে।
শিবগাতি গ্রামের মৃৎশিল্পী পদ পাল (৬১) জানান, আমি ৩৫ বছর ধরে মাটির হাড়ি, পাতিল তৈরি করে আসছি। বর্তমানে উচ্চ দ্রব্যমূল্যের যুগে স্বল্প আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। মাটির পণ্যের বিক্রির আয়ে সংসার চালানো দায়। তাই বাধ্য হয়ে আমার সন্তানরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। আমার ছেলে স্বর্ণকার, এবং এক মেয়ে বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী অনিতা পাল আমার সাথে এ কাজে সহযোগিতা করেন।
এছাড়া একই গ্রামের মৃৎশিল্পী সুবল পাল (২০ বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত) জানান, মাটির জিনিসের পাশাপাশি মেলা-পূজার সময় খেলনা তৈরি করে বিক্রি করি।
মহেশপুর গ্রামের তপন পাল বলেন, মৃৎশিল্প আমার বাপ-দাদার পেশা, তবে বর্তমানে আমি শুধুমাত্র পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করি।
মৃৎশিল্পের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, এই পেশাকে যদি সংরক্ষণ না করা হয়, তাহলে একসময় এটি সম্পূর্ণ হারিয়ে যাবে।