চলনবিলের হাট বাজারে মাছ ধরার ফাঁদ খলসুনি বিক্রিরধুম পড়েছে

এস,এম,রুহুল তাড়াশী,
সিরাজ গঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-

চলনবিলে পানি আসতে শুরু করেছে। উজা‌নের পা‌নি ও বৃ‌ষ্টির পা‌নি মি‌লে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা পা‌নির নি‌চে ডুবে যাচ্ছে। এইর ধারাবাহিকতা সিরাজগ‌ঞ্জের তাড়াশ উপ‌জেলার বি‌ভিন্ন মাঠও র‌য়ে‌ছে। এই সময়টা‌তে অ‌নে‌কেরই কাজ থা‌কেনা, তাই খেটে খাওয়া মানুষগুলো এ সময়ে জীবন-জীবিকার জন্য অন‌্য পেশা বেছে নেয়। আর এই অন‌্য পেশার ম‌ধ্যে মাছ ধরা অন‌্যতম। খলসুনি, মাছ ধরার এক প্রকার যন্ত্রের নাম। স্থানীয় ভাষায় আবার কেউ কেউ এ‌কে ধুন্দী বা চাঁই বলে। যে যে নামেই ডাকুক না কেন, মাছ ধরার সেই যন্ত্র তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। এ‌টি তৈরী কর‌তে  বাঁশ ও তালের আঁশ দরকার হয়। এ‌টি তৈরী করার পর বিভিন্ন হাট-বাজারে ‌সেগু‌লো বিক্রী হয়।

এ এলাকায় তৈরি খলসুনি (যা
ধুন্দী বা চাঁই না‌মেও প‌রি‌চিত) সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাট, গুল্টা হাট, নাটোরের গুরুদাশপুর হাট, চাঁচকৈড় হাট, রায়গঞ্জের নিমগাছীর হাট, সলঙ্গা হাট, চাটমোহর, ছাইকোলা হাট, মির্জাপুর হাটসহ অন্যান্য হাটে বিক্রি হয়ে থাকে। এসব হাটে এই সব খলসু‌নি পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয় হয়।

খলসুনি ব্যবসায়ী আছাদ সরদার জানান, তাদের বাপ /দাদার আমল থেকেই তারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত। অনেকে নতুন করে এ পেশায় আসছে, তাই দিন দিন এর সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ছেই। ভাঙ্গুড়া থানার করতকান্দি গ্রামের খলসু‌নি কা‌রিগর আলতাব হোসেন জানান, তারা প্রথমে বাঁশ চিরে খিল তুলে চিকন করে, সেগুলো শুকিয়ে নেয়া হয় হালকা রোদে। পঁচানো তালের ডাগুরের আঁশ দিয়ে খিল বান দেয়া হয়। এসব কাজে গৃহবধূ থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরাও পরিবারকে সহায়তা করে থাকে।

গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় গ্রামের সুমন ব্যাপারী জানান, তার গ্রামের প্রায় আড়াইশ’ পরিবার খলসুনি তৈরির কাজে জড়িত। আর আকারভেদে প্রতি জোড়া খলসুনির দাম ৪০০-৬০০ টাকা। কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি। আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় দাম। এক জোড়া খলসুনি তৈরিতে সময় লাগে যায় প্রায় দুই থে‌কে তিন দিন। উপকরণ বাবদ খরচ হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাটে খলসুনি বিক্রী করতে আসা ব্যবসায়ী জরিপ আহমেদ বলেন, এই হাটে অন‌্য হা‌টের চে‌য়ে বেশি  বিক্রি হয়।