কেন্দুয়ায় কিশোরী ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ, অভিযুক্তকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ আদালতের

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ময়মনসিংহ বিভাগের বিশেষ রিপোর্টারঃ
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগের মামলায় তৌহিদ (২০) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে কেন্দুয়া থানা পুলিশ,অভিযুক্তকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ আদালতের।
গত ১৯ মে সোমবার মেয়ের মা বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় মামলা দায়ের করলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরন করলে ২০মে মঙ্গলবার কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন নেত্রকোনা আমলী আদালত।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, সীমা আক্তার (১৬)
রামপুর আনোয়ারা হাই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী । সে স্কুলে যাওয়া-আসার সময় প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাবসহ উত্যক্ত ও বিরক্ত করতো নওপাড়া ইউনিয়নের ধনাচাপুর গ্রামের মোঃ সাইদুর রহমানের ছেলে বিবাদী তৌহিদ (২০)।
গত ১৭ মে সকালে উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের নন্দিখিলা গ্রাম থেকে ৯নং নওপাড়া ইউনিয়নের দনাচাপুর গ্রামে অভিযোগ কারিণীর দেবরের শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যায় তার মেয়ে । এই দিনে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মণিহারী দোকানে সদাই করতে গেলে বাড়ির পাশে একটি গাছের বাগানের সামনে যাওয়ার সাথে সাথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার পথরোধ করে হাত ধরে টানা হেঁছড়ার মাধ্যমে বাগানের ভেতর নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে । তখন তার ডাক চিৎকার ও চেঁচামেচিতে বাড়ির আশেপাশের লোকজন দৌঁড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়া যায়।
সরেজমিনে গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়- ১৭মে আশুজিয়া ইউনিয়ন নন্দীখিলা গ্রামের সীমা আক্তার দনাচাপুর গ্রামে মৃত ছদ্দু মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসে। সেখানে ছদ্দু মিয়ার মেয়ে শিরিনা আক্তার, স্বামী- রতন মিয়া ধান সিদ্ধ করার জন্য আসা নিরব বাড়িতে। ( শিরিনা শুধু ফসলের সময় আসে)। (শিরিনা আক্তারের শশুরবাড়ী মোজাফফরপুর ইউনিয়ন গগডা গ্রামে। কাজ/ কর্ম করেন আশুজিয়া ইউনিয়ন নন্দীখিলা)। সেখানে সীমা বিকেলে সুন্দর পরিবেশে ঘুরাফেরা করছিল, সন্ধ্যার পর শিরিনার বাড়ি থেকে সীমা আক্তার রাত অনুমান ৭.৩০ ঘটিকা সময় ঘরের বাইরে গেলে দুই তিনজন লোক শিরিনা ডেকে সীমাকে ঘরে দিয়ে যায়, এবং বলে যায় কে দৌড়ে চলে যায়। এবং রাতেই সাংবাদিকদেরকে ফোন দিয়ে নিয়ে বলতে চেষ্টা করে ধর্ষণের চেষ্টার বিষয় অভিযোগ উঠেছে সাইদুর রহমান এর ছেলে তৌহিদ এর নামে। জানা যায়- তৌহিদ গ্রামে নাকি মোবাইল ফোন চালায় না,মোবাইল ফোনও তার নাই।
শিরিনার সাথে কথা বলে জানা যায়- যেদিন রাতে ঘটনা ঘটেছে সেই সময় এই রকম শব্দ চেচামেচি আমি শুনি নাই, আমার স্বামীও শুনে নাই। একটু পরে আমাকে দু তিনজন লোক অন্য গ্রামের বলে গিয়েছে,তাদের আমি চিনিনা।
ভিক্টিম কিশোরী সীমা আক্তার বলেন- আমি এক বছর আগে এই ছদ্দু মিয়া পরিচিত (নানা) বাড়িতে উনি মরে যাওয়ার পর আসছিলাম,এই গ্রামের সেখানে তৌহিদ মিয়ার সাথে দেখা হয়,পরে মোবাইলে মাঝে মাঝে কথা হত, এরি মাঝে একদিন দেখা হয়। আমি এক বছর পর শিরিনা খালাদের বাড়িতে আসি, এসে তৌহিদের সাথে দেখা হয় গাছের বাগানে রাতে।
এক প্রশ্নের জন্য জবাবে তিনি বলেন- তার সাথে আমার (শারীরিক) এই রকম সম্পর্ক হয় নাই, গায়ে হাত দিয়েছে, ধর্ষণের চেষ্টাও করে নাই।
সাংবাদিক শাহ আলী তৌফিক রিপন ও কায়সার তালুকদার বলেন- ঘটনার পর রাতে ১টার সময় গিয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানতে পারি, এই গ্রামের ছদ্দু মিয়ার বাড়িতে আত্মীয়তার সূত্র বেড়াতে আসে সে। ছদ্দু মিয়ার বাড়িতে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় সে তৌহিদ নামের এক ছেলের সাথে দেখা করতে চেষ্টা করে। পরে গ্রামবাসী তাদের আপত্তিকর অবস্থায় পায় বলে জানা যায়।
তার মা মামলায় উল্লেখ করেছে যে তৌহিদ সীমাকে স্কুলে গিয়ে উত্যক্ত করতো, সেটা বিশ্বাস যোগ্য নয়। তৌহিদের বাড়ি দনাচাপুর থেকে ১৩ কিঃ মিঃ দূরে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া সার্কেল / সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা গ্রেফতার নিশ্চিত করে বলেন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
১৯ মে সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত তৌহিদ’কে আদালতে সোপর্দ করলে মাননীয় আদালত অভিযুক্তকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মামলার এসআই ২০মে মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্হল পরিদর্শন করে তদন্ত করছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।