অন‍্যরকম মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন আব্দুল মোতলেব খান

আ স ম আবু তালেব, বিশেষ প্রতিনিধি:- নাম তার আব্দুল মোতালেব খান। বাড়ি লৌহজং উপজেলাধীন মেদিনীমন্ডল ইউনিয়নস্থ মাহমুদপট্টি গ্রামে। তিনি কেবল বীর মুক্তিযোদ্ধাই নন, একজন বিশিষ্ট কবি, গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী ছিলেন। বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী আব্দুল হালিম তার অসংখ্য সঙ্গীত গেয়েছেন। তার বড় ছেলে মোঃ ফারুক আহমেদ খান শানু BBCNewsbd.com এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎে জানান, যুদ্ধের কয়েক দিন পূর্বে ছয় দফা নিয়ে কবিতা লিখে রাজাকারদের চরম শত্রুতে পরিণত হন তিনি। জীবন রক্ষার্থে ২৩ মার্চ সপরিবারে ভারতের উদ্দেশ‍্যে রওয়ানা দেন আব্দুল মোতালেব খান। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাজারে এ‍্যালোমিনিয়ামের বড় দোকান ছিল তার। সেটা ফেলেই আগরতলা, রাধানগরসহ সপরিবারে ভারতের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেন। কতিপয় রাজাকারও প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। ভারতের রাধানগরে রাজাকার কর্তৃক বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হন তারা। ভারতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল মোতালেব খান। মোঃ ফারুক খান শাওনও ভারতে প্রশিক্ষণ রত মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেছেন বলে জানান। তাছাড়া আব্দুল মোতালেব নিজের লিখিত গান গেয়ে প্রশিক্ষণ রত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস এবং অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার দু’দিন পর সপরিবারে বাংলাদেশে চলে আসেন আব্দুল মোতালেব খান। চৌদ্দগ্রামে এসে নিজের দোকান অগ্নিসংযোগে ভস্মীভূত ও লুট হয়ে যায়। বিভিন্ন সংগঠনের আর্থিক সহায়তায় কোন মতে দিন অতিবাহিত করেন তার পরিবার। নিয়মিত কবিতা এবং দেশাত্মবোধক সঙ্গীত লেখায় ব‍্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। অভাব অনটনের সংসারে বিরক্ত হয়ে তার সহধর্মিনী কবিতা এবং সঙ্গীতের পান্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলেন। তারপরও দমেননি তিনি। কবিতা ও সঙ্গীত লেখায় মগ্ন থাকায় মুক্তিযুদ্ধের কোন কাগজপত্র আর করা হয়নি তার। হাই প্রেসার থেকে হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোক করে অনেক দিন অসুখে ভূগে ১৬ ডিসেম্বর ২০০০ সালে না ফেরার দেশে চলে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব খান। তিনি ৮৩ বছর বেঁচছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সনদ না পেলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার জন্য তার অবদান কখনো ভুলবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা। উল্লেখ যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কবি, গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী আব্দুল মোতালেব BBCNews24bd.com এর বিশেষ প্রতিনিধি আ স ম আবু তালেবের নানা।