কোনো রকম পক্ষপাত করবেন না। – সরকারের উদ্দেশ্যে মান্না

আমিরুল ইসলাম
কোনো রকম পক্ষপাত করবেন না। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করাই হবে এই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আজ বিকেল সাড়ে ৩ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মহান মে দিবস ও প্রাসঙ্গিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন পিয়নের ছেলে পিয়ন পদের জন্য চাকুরী চায়; একজন শ্রমিক চায় তার ছেলে শ্রমিক হোক; তাহলে পরিবর্তন কি হলো? সিস্টেম না বদলালে কোন পরিবর্তন হবে না। ২৪ এর আন্দোলনে মনে করিয়ে দিয়েছিল, এবার বদলাতে হবে। কিন্তু কেউ মনে করছে এই সরকার সেই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন করতে পারবে, আবার কেউ মনে করছে কিছু হবে না। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ আগের মতই আচরণ করছে। সচিবালয়ে এখনো স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের দাপট চলছে। গণঅভ্যুত্থানে যারা আন্দোলন করেছে তাদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এই গণঅভ্যুত্থান মানুষের মনে আশা জাগিয়েছে, তারা পরিবর্তন চায়। লতিফুর রহমান এসেই প্রশাসন ছয় ঘন্টায় রদবদল করেন আর এই সরকার তেমন কিছুই করতে পারলো না কেন? নয় মাসে সরকার সংস্কার প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি। প্রফেসর ইউনুস সব কথা বিদেশিদের সাথে বলেন, দেশের কারো সাথে বলেন না। কেউ চায় সমাজতন্ত্র, কেউ চায় ধর্মনিরপেক্ষতা; কেউ কেউ বলছেন আগে বিচার পরে নির্বাচন; যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিবেন তত আপনার জন্য ভালো। করিডোর দিয়ে কি পৌঁছাবেন, কাকে দিবেন – কিছুই পরিষ্কার করেননি। মনে রাখতে হবে, পলিটিক্স ইজ দা কমান্ডার অফ দা সোসাইটি। গতকাল আমরা ঐকমত্য কমিশনের সাথে বসেছিলাম। আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দিতে পারি। যারা দেশ চালাচ্ছেন, তারা কোনরকম পক্ষপাত করবেন না। সবার কাছে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, মানসম্মত নির্বাচন দেওয়াই হবে এই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। নইলে নানা রকম সংকট আসবে।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, গণতান্ত্রিক ধারণার কাঙ্খিত পরিবর্তন এখনো হয়নি। মে দিবসের একটি অন্তর্নিহিত শক্তি সামগ্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতির কমিটমেন্ট থাকতে হবে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তোলাই মে দিবসের প্রতিপাদ্য হওয়া উচিত। এখনও বাংলাদেশের প্রতিটি দপ্তরে বৈষম্য। ঘরে ঘরে বৈষম্য। বৈষম্যের ইতি টানার জন্য আয় ব্যয়ের বৈষম্য দূর করতে হবে। শ্রমিকদের স্বীকৃতি দিতে হবে। এদেশের ৭৫ ভাগ মানুষ জানেই না বৃদ্ধ বয়সে তাকে কি করতে হবে। শ্রমিকের আয়ের ও কাজের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা স্কিম এর আওতায় আনতে হবে যাতে ৬৫ বছরের পরে তাকে রিক্সা চালাতে না হয়। সহানুভূতি ও করুণা দিয়ে পরিবর্তন হয় না। বাংলাদেশের সাত কোটি শ্রমিক কিন্তু সাত কোটি ভোটার। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে শ্রমিকের কথা বলতে হবে। নাগরিক ঐক্যের কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনা শ্রমিকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিন্নুর চৌধুরী দিপু, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব সহ নেতৃবৃন্দ।