কেন্দুয়ার পলাশের আত্মহত্যা সৌদি আরবে কেন?

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ময়মনসিংহ বিভাগের বিশেষ রিপোর্টারঃ
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ৯নং নওপাড়া ইউনিয়নের ইটাচকি গ্রামের সাধারণ পরিবারের কৃষকের সন্তান পলাশের আত্মহত্যা সৌদি আরবে কেন?
মা সেলিনা আক্তার -ফেল ফেল করে চেয়ে আছেন আদরের ছোট ছেলে পলাশ ফিরে আসবে । শেষ দেখা তাকে দেখবে । সর্বস্ব বিক্রয় ও ধারদেনা করে গত ৯ মাস আগে যাকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিলো ; স্থানীয় একজনের (তাদের ভাষায়- দালালের) মাধ্যমে । কথা ছিলো কোম্পানিতে কাজ দেবে, নিয়মিত বেতন দেবে, আকামা দেবে । কিন্তু কথা মতো কিছুই পায়নি পলাশ । ফলে ধার দেনার চাপে নিরাপত্তাহীন ও অনিশ্চয়তার জীবন ছেড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় পলাশ ।
ঘটনাটি জানাজানি হয়, গত শুক্রবার সৌদি আরব প্রবাসী পলাশের চাচাতো ভাই আল আমিনের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে । পলাশের মা সেলিনা আক্তার ভাঙা কণ্ঠে বলেন- আমার পলাশের লাশটা ফেরত চাই, অনেক কষ্ট আর যন্ত্রণায় সে আত্মহত্যা করেছে । পলাশের চাচাতো ভাই মোঃ কায়কোবাদ ও পলাশের আপন বড় ভাই মোঃ রানা মিয়া বলেন- নওপাড়া ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের প্রণয় সাহা (দালাল) মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করে পলাশ, আমরা এই প্রতারকের বিচার চাই ।
২৭ এপ্রিল রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের কাউরাট ইটাচকি গ্রামে পলাশের মা ও ভাই বোন কান্নায় আহাজারি করছে।
অভিযুক্ত প্রণয়ের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- সবকিছু নিয়মানুসারে চলছিলো, কোম্পানিতে কাজ করছিলো ও বেতনও পাচ্ছিলো ঠিকই কিন্তু সে অসুস্থতা জনিত কারণে ডাক্তার দেখিয়েছিলো । আবার দেখানোর কথা বলছিল পলাশ। আমার সাথে পলাশের নিয়মিত যোগাযোগ ছিলো । পরিবারের অভিযোগ ঠিক নয়, লাশ ফিরিয়ে আনা হবে, ফিরিয়ে আনার প্রসেসিং চলছে । সকল ডকুমেন্টস আছে, আমার মধ্যে কোন গাফলতি নাই, বৈধ্য লাইসেন্সের মাধ্যমে শ্রম মন্ত্রনালয়ের যাচাইকৃত মা ইন্টারনেশনাল কোম্পানিতে কাজ করেছে বলে সে কোম্পানির কাছ থেকে কিছু টাকাও পাবে,তবে সেটা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, গোয়েন্দার রিপোর্ট, পোস্টমর্ডার রিপোর্টের পর লাশ ও টাকা পাবে। আমি তার এলাকার ভাই, আমি খুব তারাতাড়ি অতি দ্রুত লাশ আনতে চেষ্টা করবো।
নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন সালাম পলাশের পরিবারের সাথে কথা বলে তিনি বলেন- পলাশ সৌদি আরবে কাজের জন্য গিয়েছে, সেখানে গিয়ে টাকা রোজগার করে মা ও ভাই বোনদের সমস্যা নিরসন করবে, সৌদি আরবে সে আত্মহত্যা করলো কেন?
আমি প্রনয়ের সাথে কথা বলবো,তার মৃত্যুর জন্য যদি প্রনয় দায়ী থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, তার বিচার হবে।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুঠোফোনে বলেন- বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই । আমি ছুটিতে ছিলাম, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে, ওসি সাহেব বিষয়টি জানতে পারেন।