চাঞ্চলকর ক্লুলেস তারা মিয়া হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও ০৪(চার) জন আসামী গ্রেফতার”

মো :লুৎফুর রহমান হৃদয়, ময়মনসিংহ বিভাগীয় ব্যুরোঃ
কেন্দুয়া উপজেলার গড়ডোবা ইউনিয়নের ওয়াই গ্রামের তারা মিয়া ফকির হত্যা ঘটনায় পৃথক অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে পুলিশ একই ইউনিয়নের কাটাহুশিয়া গ্রামের নয়ন মিয়ার ছেলে আফজাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফাতারকৃত আফজাল হোসেনকে পুলিশ প্রহরায় বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোণা আদালতে পাঠালে আফজাল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
তিনি আদালতকে জানান, নেশার টাকার চেয়ে না পেয়ে তারা মিয়া ফকিরকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আফজালের কথা মতো ওয়াই গ্রামের জুলহাস মিয়ার ছেলে সজলকেও গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এর আগে গত ১১ই এপ্রিল কাটাহুশিয়া গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে শামীমকে গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানা পুলিশের উপ-পরির্দশক (এস.আই) রেজাউল করিম জানান, শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শামীমের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেছে। গত ২১ মার্চ রাতে গড়াডোবা ইউনিয়নের বাশাটি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাত অনুমান ১০ টার দিকে দুর্বৃত্তরা কাচামাল ব্যবসায়ী তারা মিয়া ফকিরকে হত্যা করে বাড়ির পাশেই একটি ব্রীজের নিচে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় পুলিশ তারা মিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরদিন ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থান তার বাবার কবরের পাশেই তারা মিয়া ফকিরকে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়। এ ঘটনায় তারা মিয়ার ছেলে বাশারুল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার সকালে মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় তারা মিয়া ফকির হত্যার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন এঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, কাটাহুশিয়া গ্রামের নয়ন মিয়ার ছেলে আফজাল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
মামলাটির প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তারা মিয়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীরা প্রত্যেকেই নেশার সাথে জড়িত। আসামীরা উপরোক্ত ঘটনাস্থলের পাশে একটি কালভার্টে বসে প্রায় সময়ই মাদক সেবন করতো। মৃত তারা মিয়া একজন প্রতিবাদী প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি উক্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের পথে বিভিন্ন সময় আসামীদের নেশা করা অবস্থায় দেখতে পেয়ে নেশা না করার জন্য বলতেন এবং মাঝেমধ্যে বকাঝকা করতেন। এতে আসামীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ভিকটিম তারা মিয়াকে খুন করার পরিকল্পনা করে এবং ঘটনার দিন, তারিখ ও সময়ে অর্থ্যাৎ গত ২১-০৩-২০২৫ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকায় আসামীরা ভিকটিম তারা মিয়াকে পেয়ে তার ব্যবসায়ের টাকা ছিনাইয়া নেয় এবং কেন্দুয়া থানাধীন গড়াডোবা ইউনিয়নের অর্ন্তগত কাটাহুসিয়া সাকিনস্থ সাতারখালী ব্রীজের উত্তর-পশ্চিম পাশে ধারালো অস্ত্রাদি দ্বারা মাথায়, মুখে আঘাত করে হত্যা করে ও লাশ গুম করার জন্য সাতারখালী খালে ভিকটিমের লাশ ফেলে দেয়।