সিরাজদিখানে জিডি করতে এএসআই মাহফুজ নিতেন তিন প্যাকেট বেনসন

আ স ম আবু তালেব, বিশেষ প্রতিনিধি:- পূর্বে থানায় জিডি করতে গেলে অসাধু পুলিশ টাকা নিলেও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে এএসআই মাহফুজ টাকা না চেয়ে ঘুস হিসেবে তিন প্যাকেট বেনসন চাইতেন। ভুক্তভোগী মো. সালমান কবীর তেমনি জিডি করার ফাঁদে পড়ে এএসআই মাহফুজকে ঘুষ হিসেবে তিন প্যাকেট বেনসনের মূল্য বাবদ ১২শ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি BBC News 24কে জানান, জিডি করার শর্তে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেটের সমমূল্য দাবি করেন থানার এএসআই মাহফুজুর রহমান। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ক্লোজড করে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সালমান কবীর জানান, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি পাসপোর্ট হারানোর বিষয়ে জিডি করতে থানায় যান। জিডি গ্রহণে শুরুতে অনীহা প্রকাশ করেন কর্তব্যরত কর্মকর্তা এএসআই মাহফুজুর রহমান। তিনি জানান, “উনি বললেন পাসপোর্ট যদি ঢাকার পল্টনে হারিয়ে যায়, তাহলে ওখানেই জিডি করতে হবে। আমি অনেক অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ‘তাহলে তিন প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিয়ে আসেন, না হলে ওই টাকার সমপরিমাণ দিয়ে যান।’ পরে আমি থানার পুকুরপাড়ের একটি দোকানে গিয়ে নগদ ১২শ টাকা দিয়ে আসি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এএসআই মাহফুজুর রহমান প্রথমে অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই না বোঝার ভান করেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপে প্রতিবেদককে থানায় আসার জন্য বলেন।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আ.ন.ম ইমরান খান বলেন, “থানায় কোনো কাজ করতে টাকা লাগে না। আমি ছুটিতে আছি, তা না হলে অবশ্যই তার (মাহফুজের) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম।”
ঘটনার দিন রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন এসআই রোজিনা। পরবর্তীতে দায়িত্ব নেন এএসআই মাহফুজুর রহমান। দায়িত্ব হস্তান্তরের মাঝামাঝি সময়ে জিডিটি রোজিনার নামেই এন্ট্রি করা হলেও প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন মাহফুজুর রহমান।
ঘটনার প্রেক্ষিতে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি আমলে নিয়ে এএসআই মাহফুজুর রহমানকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্লোজড করেছে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।