বাল্যবিবাহ রোধে কিশোরীদের সচেতনতা বাড়ছে

মোঃ মাইদুল ইসলাম প্রামানিক,
নাগেশ্বরী উপজেলা প্রতিনিধিঃ

নারীর অগ্রগতির পথে বাল্যবিবাহ অনেক বড় একটি বাধা,নিম্ন আয়ের পরিবারে বাল্য বিয়ের হার তুলনামুলক ভাবে বেশি।
আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় বেশিরভাগ বাবা-মা কম বয়সে তাদের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন ।
কারণ তারা মেয়েকে বোঝা ভাবেন ।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ি ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামের বাদশাহ আলমের কন্যা রিক্তা বলেন,

আমি যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি আমার বাবা আমাকে বিবাহ দেয়ার চেষ্টা করেন,কারণ হিসেবে ছিলো, আমরা নিম্ন আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবার । আমরা পাঁচ বোন দুই ভাই,আমার বড় চার বোনের বিয়ে হয়ে গেছে ।
কিভাবে আমার লেখা – পড়ার খরচ চালাবে?

আমাদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিলো কৃষি । নদীভাঙ্গন এর কবলে পড়ে জায়গা জমি সব নদীতে বিলীন হয়ে যায়,আমার পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায়।

প্রতিবেশিরা সবসময় বলত মেয়ে মানুষকে এত লেখা – পড়া করিয়ে কি হবে?
সেই তো গোয়াল ঘরে গরুর গবর ফেলতে হবে!
প্রতিবেশিদের মুখে একরকম কথা, চিন্তা করে বাবা আমাকে বিয়ে দিতে চায়।
কিন্তু আমার মত ছিলো না, কিন্তু হ্যাঁ তখনও আমি কিশোরী ছিলাম।
তবে আমার মা ছিলো আমার পক্ষে,মায়ের স্বপ্ন ছিলো আমাকে নিয়ে ।
মা ও আমি দুজনে মিলে বাবাকে বুঝিয়ে বলি যে,
আমার একটা স্বপ্ন আছে,মানুষের মতো মানুষ হয়ে
নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই । অনেক বুঝানোর পর বাবাকে রাজি করাই,যেন আমার বাল্যবিবাহ না দেয় ।
বাবা-মা এখন প্রতিটা কাজেই উৎসাহ দেয়।
তাদের স্বপ্ন একদিন প্রতিষ্ঠিত হবো।

আমি এখন অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করিতেছি । পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সংগঠনের সাথে জড়িত হই । মহিদেব যুব সমাজ কল্যাণ সমিতি (এমজেএসকেএস) এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর সহায়তায়

বেরুবাড়িতে অবস্থিত বিবিএফজি প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ড পর্যায়ে শিক্ষিকা পদে আছি । আলহামদুলিল্লাহ এখন আমার উপার্জনের টাকা দিয়ে আমার লেখাপড়ার খরচ আমি চালাইতে পারি ।

পরিশেষে সকল ক্রেডিট আমার মাকে দিতে চাই । তিনি আমার স্বপ্নের একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু । ভালোবাসি বাবা মাকে । স্বপ্ন আমার প্রশাসন ক্যাডার হব ।