সোলার প্যানেল থেকেই ২০টি পারমাণবিক চুল্লির বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা

২০টি পারমাণবিক চুল্লির সমান বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারবে তথাকথিত এক ‘অলৌকিক উপাদান’ থেকে তৈরি পাতলা ও বাঁকানো যায় এমন বিভিন্ন সৌরপ্যানেল। জাপান সরকারের প্রকাশ করা পরিকল্পনায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে ।

জাপানের শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকাশিত খসরা পরিকল্পনা অনুসারে, পরবর্তী প্রজন্মের এইসব সৌর প্যানেল তৈরি হয়েছে ‘পেরোভস্কাইট’ নামের উপাদান দিয়ে, যা ২০৪০ সাল নাগাদ ২০ গিগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।

পেরোভস্কাইট পরিচিতি পেয়ে আসছে সৌরশক্তির ভবিষ্যৎ হিসেবে, যা প্রচলিত সিলিকনভিত্তিক সৌরকোষের চেয়েও উচ্চ কার্যকারিতা দেখাতে সক্ষম। তাত্ত্বিকভাবে, পেরোভস্কাইটের একেক কোষের কার্যকারিতা ৪৩ শতাংশ, যেখানে একটি আদর্শ সিলিকন কোষের কার্যকারিতা ২৯ শতাংশ। এমনকি নবায়নযোগ্য শক্তিতে দ্রুত রূপান্তরের সম্ভাবনাও দেখাচ্ছে নতুন এ উপাদান দিয়ে তৈরি সৌর প্যানেলগুলো।

জাপানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হয় সৌর শক্তিকে, যেখানে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করেছে ২০১১ সালে বিধ্বংসী ভূমিকম্প ও সুনামির পর ফুকুশিমায় ঘটে যাওয়া পারমাণবিক দুর্ঘটনাটি। এ ঘটনার পর বৈদ্যুতিক গ্রিড বিপর্যয়ের পাশাপাশি পরিবেশে দূষিত তেজস্ক্রিয় উপাদান ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে, সে সময় এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি নাগরিক এলাকাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

গত ১৩ বছরে গোটা জাপানেই সৌর প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে, যেখানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার এখন ১০ শতাংশের কাছাকাছি। কোনো পাহাড়ি ভূখণ্ডে তুলনামূলক উচ্চ ঘনত্বের জনসংখ্যা থাকার মানে দাঁড়ায়, সেইসব এলাকায় প্রচলিত সিলিকনভিত্তিক সৌর কোষের চাহিদা এর শেষ সীমার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে।

পেরোভস্কাইট সৌর কোষের নমনীয়তা ও স্থিতিস্থাপকতার কারণে গাড়ির ছাদ থেকে বিভিন্ন বাঁকানো আকাশচুম্বি দালান, সবকিছুতেই এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ প্রযুক্তি গবেষণায় বড় পরিসরে অগ্রগতি দেখা গেছে, যেখানে বিভিন্ন স্টার্টআপ কোম্পানি এরইমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এগুলো বিক্রি শুরু করেছে।

সুইডেনভিত্তিক স্টার্টআপ ‘এক্সেজার’ এরইমধ্যে বেশ কিছু বাজারজাত পণ্যে এমন বাঁকানো সৌর কোষ বসিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হেডফোন এমনকি কিবোর্ড-ও।