রংপুর বিভাগ লালমনিরহাট জেলা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের বিরুদ্ধে ৫৯ কর্মচারির অনাস্হা
মোঃ রাওফুল বরাত বাঁধন ঢালী।
লালমনিরহাট জেলা আদিতমারী পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের ৬০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর সকলেই (৫৯ জন) ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের (ডিজিএম) বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন। ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিনে আদিতমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের (ডিজিএম) দায়িত্বে রয়েছেন আইয়ুব আলী। তিনি যোগদানের পর থেকে গ্রাহকদের হয়রানী, ভুতরে বিল ও অবৈধ জরিমানা আদায়ের কারনে ফুসে উঠেছে সাধারন গ্রাহকরা। শুধু গ্রাহকরাই নয়। অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথেও অসাদাচরন করেন ডিজিএম আইয়ুব আলী। ডিজিএমের নিয়ম বহির্ভৃুত নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে সাধারন গ্রাহকদের বাকবিতন্ডাসহ হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
অফিসের সকল শ্রেণির স্টাফদের সাথে বাবা মা তুলে গালিগালাজ করেন ডিজিএম আইয়ুব আলী। অফিসকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি ভেবে আমিত্ব প্রদর্শন করেন তিনি। তার বেঁধে দেয়া নিয়মে অফিস করতে হয়। যে কারনে অফিসের শিষ্টাচার ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর আদিতমারী জোনাল অফিসের অফিস সহায়ক খাইরুল আলমকে বিনা কারনে অশালিন ভাষায় গালমন্দ করেন ডিজিএম। এতে অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী অতিষ্ট হয়ে অসাদাচরনের অভিযোগ তুলে ডিজিএম আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে জিএম বরাবর লিখিত আবেদন করেন। এতে অনতিবিলম্বে ডিজিএমের বদলির দাবি তুলেন আদিতমারী জোনাল অফিসে কর্মরত সকল (৫৯ জন) কর্মকর্তা কর্মচারী।
আদিতমারী জোনাল অফিসের অফিস সহায়ক খাইরুল আলম বলেন, বিনা কারনে আমাকে গালমন্দ করেছেন ডিজিএম স্যার। এমন আচরন প্রায় দিন করে থাকেন। যা শুধু আমার সাথে নয়, সকলের সাথেই করে থাকেন। আরও অনেক জোনাল অফিস রয়েছে। আরও অনেক ডিজিএম রয়েছেন। তারা তো এমন আচরন করেন না।
আদিতমারী জোনাল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইসি) শাহ জালাল বলেন, ডিজিএম আইয়ুব আলী মহোদয় প্রায় সময় অফিসে আমিত্ব দেখান। নিম্ন পদের অধিনস্থ কর্মচারীদের প্রতি অসাদাচরন করেন। এতে অফিসের শৃঙ্খলা বিনষ্টের পথে। এ কারনে সকলেই ডিজিএমের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে জিএম স্যার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে প্রতিকার চেয়েছি। না হলে তারা আইন হাতে তুলে নিতে পারে।
ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আইয়ুব আলী বলেন, ঘুষ দুর্নীতি অনিয়ম ও কাজে অবহেলা করায় গ্রাহক হয়রানী বেড়েছিল। এমন কয়েকজনকে অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীকে বরখাস্থ করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে লিখিত অনাস্থা এনেছেন। যা ওই দিনই জিএম স্যার সশরীরে তদন্ত করেছেন এবং তদন্ত কমিটিও করেছেন। তদন্তে দোষী হলে যা শাস্তি দেয়া হবে তা মেনে নিব। তবুও ঘুষ দুর্নীতি আর অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মহিতুল ইসলাম বলেন, সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ডিজিএমের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন। বিষয়টি জেনে সশরীরে তদন্ত করেছি এবং ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ঘটনাটি সম্ভবত, নিজের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারনে হতে পারে।