১৬ হাজার টাকার বিল দেড় কোটি টাকা

মু.হায়দার আলী,নাটোর জেলা প্রতিনিধি।

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪!

নাটোর সদর উপজেলার আমিরগঞ্জে জালাল উদ্দিন নামে এক রাইচ মিলে ১৬ হাজার ৬২০ টাকা বিলের পরিবর্তে ওই মিলের এক মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১ কোটি ৫২ লাখ ৫১ হাজার ৩১১ টাকা। অস্বাভাবিক এমন বিল নিয়ে এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নজরে আনা হলে তা সংশোধন করে সঠিক বিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। যারা এমন ভুল কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। এদিকে বুধবার বিকাল ৪টার দিকে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ অফিসের কয়েকজন জালালের বাড়ি গিয়ে ১৬ হাজার ৬২০ টাকার পুনর্নির্ধারিত বিলটি হাতে দিয়ে আসেন।

জানা গেছে, সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া এলাকার আমিরগঞ্জের আবদুর রহিমের ছেলে মো. জালাল উদ্দিন প্রায় ৪-৫ বছর আগে চালকল হিসেবে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহণ করলেও বর্তমানে সেখানে তিনি ধান-চাল মাড়াই করেন না। ঔষধি গ্রাম হিসেবে খ্যাত লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়ার ভেষজ চাষীদের উৎপাদিত ভেষজ পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ (গুঁড়ো) করার কাজে এই চালকলটি ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও বলেন, গত এক বছরের হিসাবমতে গড়ে প্রতি মাসে এই মিলে বিদ্যুৎ বিল আসে ১৫ হাজার টাকা। বিভিন্ন ব্যস্ততায় আমি বেশ কিছুদিন প্রতিষ্ঠানে আসতে পারিনি।

সোমবার মিলে এসে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেখে তার মাথা খারাপ হওয়ার উপক্রম হয়। বিলে গত ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১ কোটি ৫২ লাখ ৫১ হাজার ৩১১ টাকা বিল পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে বিল হাতে নাটোর শহরের ফুলবাগানে অবস্থিত নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সদর দফতরে যাই। এ সময় বিলিং সহকারীদের কাছে অভিযোগ জানালে তারা সমস্যার কোনো সমাধান না করে উল্টো আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।

নাটোর পল্লী বিদ্যুতের একাধিক গ্রাহকের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে এমন ভুতুড়ে বিলের কারণে তাদের বিপদে পড়তে হয়। এসব বিষয় সমাধান করতে হলে অনেক দৌড়ঝাপ করতে হয়। এজন্য তাদের ভোগান্তিসহ হয়রানির শিকার হতে হয়।

জালালউদ্দিন বলেন, অফিস থেকে বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে ৪টার মধ্যে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে সংশোধিত বিল তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে এসেছেন। এ সময় তারা ভুল বিলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সংশোধিত বিল পাওয়ার পর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে তার আর কোনো অভিযোগ নেই।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (কারিগরি) মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, এটা বড় ধরনের একটি ভুল। বিলটি সংশোধন করে গ্রাহকের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। এই ভুলের জন্য গ্রাহকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। এমন ভুল যাতে আর না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। যারা এমন ভুল কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।