নাটোর জেলার বড়াইগ্রামে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৬ জন গুলিবিদ্ধ
মু.হায়দার আলী , নাটোর জেলা প্রতিনিধি।
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৬ জন রাবার বুলেট বিদ্ধসহ ১০জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ১৪টি দোকান ও ৯টি বাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ( ০৮/০৯/২০২৪ ) রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের দাসগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন—ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু (৩৯), বিএনপি কর্মী মামুন হোসেন (২১), সাগর আলী (২০), মশিউর রহমান (২৮), জাহিদ আলী (১৮), মেহেদী হাসান (২৮) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহিন মালিথা (৬০)।
ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন , ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। কমিটি গঠনের পরদিন ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি বাতিলের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে হাবিবুর রহমানের সমর্থকেরা। এ সময় উপজেলা বিএনপির নেতা কর্মীদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তাঁরা।
রবিউল ইসলাম টিপু বলেন, ‘শনিবার জনি (২৮) নামের ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারপিট করে অফিস ভাঙচুর করে হাবিবুর রহমান ও তাঁর লোকজন। রোববার সন্ধ্যায় শতাধিক লোকজন নিয়ে এসে দাসগ্রাম বাজারে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এ সময় হাবিবুর রহমানের ভাই সাইদুল ইসলাম ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকে। লোকজন পালিয়ে গেলে দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ের ১৪টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে আমার ও সাইদুল ইসলাম, সালেক আলী, ইউনুস আলী, আনিসুর রহমান, আব্দুল হান্নান, নুর নবী, খায়রুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহুরুল মালিথার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে লুটপাল করা হয়।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রবিউল ইসলাম টিপু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহুরুল মালিথা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ সরদার, যুবলীগ নেতা হান্নান সরদার আমার দোকান ঘর ভাঙচুর ও যুবদলের কার্যালয় ভাঙচুর লুটপাট করে। আমার সমর্থকেরা গিয়ে তাদের কিছু ভাঙচুর করেছে।
ওসমান মোল্লা নামে এক বেকারি মালিক বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ সমর্থন করি। কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ভেতরে কাজ করছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। দোকান থেকে বের হয়ে দেখি ককটেল ফাটানো হয়েছে। কয়েকজন হেলমেট পরে গুলি করছে। আমি পালিয়ে গেলে আমার বেকারির দোকান ভাঙচুর করা হয়।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের নেতা কর্মীরা কেউ এলাকায় নাই। তাদের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব আমাদের ওপর কেন দোষ চাপানো হচ্ছে ?
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডলি রাণী বলেন, আহতদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ ও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাতের চিহ্ন আছে।
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক শাফিউল আযম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।