রংপুর কারাগারেকয়েদির রহস্য জনক মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা, নিরাপত্তা জোরদার

মোঃ রাওফুল বরাত বাঁধন ঢালী :

দেশে একের পর এক কারাগার লোপাট,
রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রফিকুল ইসলাম নামের এক কয়েদির লাঠির আঘাতে বাহারুল বাদশা নামের আরেক কয়েদি নিহত হয়েছেন বলে জানা যায় শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকাল সোয়া ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এঘটনায় কয়েদিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। একপর্যায়ে কারারক্ষীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারারক্ষীরা ফাঁকা গুলি ছুড়েন।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান ও ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগারে যান। সেখানে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষুব্ধ কয়েদিদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানান।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুপুর সোয়া ২টার দিকে বলেন, আজ সকাল সোয়া ৮টার পর কারাগারের ভেতরে গাছ থেকে আমড়া পেড়ে খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রফিকুল ও বাহারুল নামের দুই কয়েদির মধ্যে ঝগড়া বাধে। বিবাদের একপর্যায়ে রফিকুল বাহারুলকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। কারাগারের নার্স এসে বাহারুলের শরীরের পালস পাচ্ছিলেন না। তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের পীরগঞ্জের বাহাদুর মিয়ার ছেলে বাহারুল বাদশা। আজ সকালে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্দিদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় কারাগারের ভেতরে বিক্ষুব্ধরা বিক্ষোভ শুরু করলে কারাপুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

কারাগারের আশপাশের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা গুলির বিকট শব্দ শুনতে পায় বলে নিশ্চিত করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, সকাল থেকে কারাগারের ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি। এ সময় মানুষজন ছুটোছুটি করছিল। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে থামিয়ে দেওয়া হয়। সবার মধ্যে একটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়।

এদিকে, সকাল থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারাগারের ভেতরে এবং বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাসহ সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন তারা।

রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে ও বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় শাহজাহান ও মোতালেব নামের দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসলে কয়েদির হাতে কয়েদি খুন না লুকিয়ে আছে পর্দার আড়ালে কোনও অজানা তর্থ তা সামনে আসা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।