লিবিয়ায় মানব পাচার করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার
তৌহিদ , মাগুরা প্রতিনিধি;
মাগুরায় নাসির নামে এক যুবককে ভালো চাকরি দেয়ার কথা বলে লিবিয়ায় পাঠানোর পর শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ করে পরিবারকে দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় অভিযূক্ত একটি আন্তর্জাতিক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মাগুরা সদর থানায় নাসিরের পরিবারের দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে শুক্রবার কক্সবাজার সিআইডি পুলিশ বাদশা মিয়া (৪২) ও আরজু বেগম (৩১) নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার পাহাড়িয়া খালীতে। চক্রটি ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করত। এরপর ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠাতো। এই প্রক্রিয়ায় অনেক ভুক্তভোগী সাগরে মৃত্যুবরণ করেছে, কিছু লোক উদ্ধার হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ভুক্তভোগী ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে লিবিয়ায় যাওয়া মাগুরা সদরের বাসিন্দা নাছিরকে আটকে দেশে তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে নাছিরের পরিবারের করা মামলায় তাদের কে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, ভুক্তভোগী নাছির গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাতস্থানে মানবপাচারকারী চক্র আটক করে। পরে দেশে তার পরিবারের কাছে ইমোতে কল করে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। মুক্তিপণ প্রদানের জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে।
গ্রেপ্তার বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট একাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। উক্ত একাউন্টে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় পরে উক্ত একাউন্ট থেকে ১০ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৫ টাকা উত্তোলন করা হয়।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে যে, গ্রেফতারকৃতরা আদালতে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করে পরে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।