শেষ হাসি হাঁসলো মোংলাবাসী;সাত মাস পরে বেনাপোল-মোংলা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু
মো: আমিরুল ইসলাম বাবু, খুলনা :
অবশেষে শেষ হাসি হাঁসলো মোংলাবাসী। ৭৫ বছর পরে হলেও ট্রেন যোগাযোগ ব্যাবস্থার সুবিধা পেল দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলা। উদ্বোধনের সাত মাস পরে হলেও বেনাপোল-মোংলা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ শনিবার (১ জুন) দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোল জংশন থেকে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলার উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেল বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এরআগে
শনিবার সকালে ট্রেনটি খুলনা থেকে ভোর ৬টায় ছেড়ে ৯টা ২৫ মিনিটে বেনাপোল জংশনে এসে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে সকাল ১০টায় যাত্রী ভর্তি করে মোংলার উদ্দেশ্যে রওনা করে ট্রেনটি। খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত ট্রেনটি বেতনা এক্সপ্রেস নামে যাওয়ার পর সেখান থেকে মোংলা কমিউটার নামে চলবে। ১৩৮ কিলোমিটার রুটে মোট ৮টি স্টেশনে দাঁড়াবে। খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত এর সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টা ৫০ কিলোমিটার, এরপর ফুলতলা থেকে মোংলা নতুন রেলপথে এ ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। মোংলায় পৌঁছাতে সময় লাগবে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা।
প্রথম বারের মত বাগেরহাটের যাত্রী মোতালেব হোসেন বলেন, আমি সকালে ভারত থেকে এসেছি। এখন মোংলার ট্রেনে উঠে কাটাখালী স্টেশনে নামব। এর আগে বাসে যাতায়াত করতাম। এতে খুলনা থেকে বাস পরিবর্তন করতে হতো। কিন্তু ট্রেন চালু হওয়াতে সময় কম লাগবে আর ভাড়াও কম। মোংলা বন্দর এলাকার ব্যবসায়ী মো. মিজানুর বলেন, আমি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করি। মোংলা থেকে বেনাপোলে ট্রেন চালু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে যদি যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি মালবাহী ট্রেনও চালু করা হয় তাহলে মালামাল বহনের জন্যও অনেক সুবিধা হবে। আমরা দ্রুত মালবাহী ট্রেন চালুর দাবি জানাচ্ছি।
প্রথমদিনে মোংলা রেলপথে ট্রেন চলাচলের সাক্ষী হয়ে বেতনা এক্সপ্রেসে যাত্রা শুরু করেন কয়েকজন যুবক। এদের মধ্যে হাসান (২৩) নামে এক যুবক বলেন, আমরা সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য আগে বাসে যেতাম। এতে করে সময় বেশি লাগতো। এখন আমরা ট্রেনে করে অল্প সময়ে মোংলা গিয়ে সুন্দরবন ঘুরে আসতে পারব। যদিও আজ সুন্দরবন যাচ্ছি না, আজ ইতিহাসে সাক্ষী হতে মোংলার পথে প্রথম ট্রেনে যাত্রা করছি।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বেনাপোল থেকে যাত্রী ভর্তি বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোংলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নাভারণ, ঝিকরগাছা, যশোর জংশন, রূপদিয়া, সিঙ্গিয়া, চেঙ্গুটিয়া, নওয়াপাড়া, বেজেরডাঙ্গা, ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালি, চুলকাটি বাজার, ভাগা ও দিগরাজ স্টেশনে যাত্রাবিরতির পর মোংলায় যাবে। তিনি বলেন, ট্রেনটি মোংলায় পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ রুটে একই সময়ে ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেনটিতে মোট আসন সংখ্যা ৭১৬টি। বেনাপোল থেকে প্রায় ৬০০ জন যাত্রী নিয়ে মোংলায় যাচ্ছে ট্রেনটি।##