এবার কোহলিদের বিরুদ্ধে গতির ঝড় তুলে লক্ষ্ণৌকে জেতালেন মায়াঙ্ক
কাজি সোহেল রানা : ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) টানা দ্বিতীয় হারের স্বাদ পেল বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের কাছে আজ কোহলিরা হেরেছেন ২৮ রানে। এর আগে আইপিলের উদ্বোধনী ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হার দিয়ে শুরু করে বেঙ্গালুরু। দ্বিতীয় ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে জয় পেলেও পরের ম্যাচে হেরে যায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে। এবার লক্ষ্ণৌর কাছেও লড়াইবিহীন আত্মসমর্পণ করল ফাফ ডু প্লেসির দল। অন্য দিকে লক্ষ্ণৌর তৃতীয় ম্যাচে এটি দ্বিতীয় জয়।
বেঙ্গালুরুতে টসে জিতে লক্ষ্ণৌকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় বেঙ্গালুরু। কুইন্টন ডি ককের দুর্দান্ত ৮১ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮১ রানের পুঁজি পায় লক্ষ্ণৌ। জবাবে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ১৯.৪ ওভারে ১৫৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় বেঙ্গালুরু।
১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন ম্যাচসেরা মায়াঙ্ক যাদব। এরই মধ্যে গতির ঝড়ে ‘মাথায় মারা পেসার’ হিসেবে বেশ পরিচিত পেয়েছেন যাদব। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচসেরা হলেন মায়াঙ্ক। এদিন এবারের আইপিএলে নিজের করা দ্রুততম বলের রেকর্ড মায়াঙ্ক নিজেই ভেঙেছেন। আগের ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ঘণ্টায় ১৫৫.৮ কিলোমিটার বেগে বল করেছিলেন এ পেসার। আজ করলেন ১৫৬.৭ কিলোমিটার বেগে।১৮১ রানের জবাবে শুরুটা ভালোই করে বেঙ্গালুরু। প্রথম ৪ ওভারেই ৩৬ রান করে কোহলি-ডু প্লেসির জুটি। কিন্তু এরপরই ছন্দপতন। পরের দুই ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বেঙ্গালুরু। মনিমরন সিদ্ধার্থ ফিরিয়ে দেন ১৬ বলে ২২ রান করা কোহলিকে। ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রানআউট হয়ে ফেরেন ডু প্লেসি। বেঙ্গালুরু অধিনায়ক করেন ১৩ বলে ১৯ রান। একই ওভারে রানের খাতা খোলার আগে মায়াঙ্ক যাদব ফেরান গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে।দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলাতে পারেনি বেঙ্গালুরু। লক্ষ্ণৌর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে একরকম অসহায় হয়ে পড়ে তারা। ১০ ওভার শেষে বেঙ্গালুরুর রান ছিল ৪ উইকেটে ৬৩। রজত পাতিদার এক প্রান্তে চেষ্টা করে গেলেও অন্য প্রান্ত থেকে তেমন কোনো সঙ্গ পাননি। ১৫তম ওভারে ২১ বলে ২৯ রান করা পাতিদারও ফিরে যান। শেষ দিকে বদলি ব্যাটসম্যান মাহিপাল লোমোরের ঝোড়ো ১৩ বলে ৩৩ রান হারের ব্যবধানই শুধু কমিয়েছে। বেঙ্গালুরু থেমে যায় ১৫৩ রানে।এর আগে প্রথম ওভারেই ৩ চার মেরে লক্ষ্ণৌকে দারুণ শুরু এনে দেন ডি কক। সেই গতিতে এরপর লক্ষ্ণৌকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। প্রথম ৫ ওভারেই লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ৪৬ রান এনে দেন ডি কক। দলীয় ৫৩ রানে ফেরেন রাহুল। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ২০ রান। এরপর দেবদূত পাড়িক্কাল (৬) দ্রুত ফিরে গেলেও রানের গতি সচল রাখেন ডি কক। তাঁকে সঙ্গ দিয়ে মার্কাস স্টয়নিস করেন ১৫ বলে ২৪ রান। ১৭তম ওভারে দলীয় ১৪৩ রানে ফেরেন ডি কক। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৫৬ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ৮১ রান। এরপর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১ চার ও ৫ ছক্কায় ২১ বলে ৪০ রান করে অপরাজিত থাকেন নিকোলাস পুরান। লক্ষ্ণৌ পায় ১৮১ রানের সংগ্রহ। রান তাড়ায় যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ম্যাচের কোনো পর্যায়ে সেভাবে দেখাতে পারেনি বেঙ্গালুরু। এই হারে পয়েন্ট তালিকার নয়ে নামল বেঙ্গালুরু। যাদের নিচে আছে কেবল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস
দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মায়াঙ্ক যাদব
সংক্ষিপ্ত স্কোর
লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস: ২০ ওভারে ১৮১/৫ (ডি কক ৮১, পুরান ৪০*, স্টয়নিস ২৪, রাহুল ২০; ম্যাক্সওয়েল ২/২৩, দয়াল ১/২৪, টপলি ১/৩৯)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স: ১৯.৪ ওভারে ১৫৩ (লোমোর ৩৩, পাতিদার ২৯, কোহলি ২২, ডু প্লেসি ১৯; যাদব ৩/১৪, নাভীন ২/২৫, স্টয়নিস ১/৯, সিদ্ধার্থ ১/২১)
ফল: লক্ষ্ণৌ ২৮ রানে জয়ী।
।