ক্বিরাত প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এম পি সেখ জুয়েল

কুরআন ও দ্বীনি শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় মূল্যবোধের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে

মো. আমিরুল ইসলাম বাবু,
বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেছেন, স্বাধীন সোনার বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার প্রসারে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেন। এ দেশে ইসলামের সেবায় তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ইসলাম প্রচার ও প্রসারে অনেক অবদান রেখে চলেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা সদর ও উপজেলায় ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করে তিনি এ দেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষের মন জয় করেছেন। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দূরীকরণ, নারীর সহিংসতা রোধ, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে দেশব্যাপী ৫৬৪টি মডেল মসজিদ। তিনি আরো বলেন, এদেশের আলেম উলামা পীর মাশায়েখদের দাবি ছিল স্বতন্ত্র ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলিয়া মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার লক্ষে সারা দেশের সব ফাজিল ডিগ্রি, কামিল এম এ মাদরাসার সমন্বয়ে ২০১৩ সালে ঢাকা মোহাম্মদপুর বসিলায় ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ৫৪টি মাদরাসায় অনার্স কোর্স চালু আছে। জাতীয় সংসদে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে এম এ সমমান ডিগ্রি দিয়ে সনদ প্রদান করে আইন পাস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও কুরআন শিক্ষায় এগিয়ে এসেছে এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। আজকের এ ক্বিরাত প্রতিযোগীতা তারই প্রমাণ বহন করে। আগামীতেও শিক্ষার্থীদেরকে দ্বীনি শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে হবে। তাহলে তারা আদর্শ নাগরিক হিসেবে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।
শনিবার বেলা ১১টা নগরীর হ্যানে রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয় আয়োজিত শহীদ শেখ আবু নাসের আন্তঃস্কুল ক্বিরাত প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। হ্যানে রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ড. মো. সাঈদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুল্লাহ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র ও নৌ-পরিবহন মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি শেখ জালাল উদ্দিন রুবেল, খুলনা সদর থানার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মোমেন ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাহিদ হোসেন। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, রূপসা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুব রহমান, সিটি গালর্স কলেজের প্রধান শিক্ষক নাদিরা পারভিন, পিডব্লিউডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. লিয়াকত হোসেন, নজরুল নগর গালর্স স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসমা খাতুন, বানিয়া খামার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক বাদশা খান, প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান, প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আফরোজা, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল আহাদ, প্রধান শিক্ষক পরিতোষ মন্ডল, প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আবুল হাসান, প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন, প্রধান শিক্ষক সালেহ আহমেদ, ফাতেমা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিস্টার শিখা গোমেজ, প্রধান শিক্ষক সাহেব আলীসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।
ক্বিরাত প্রতিযোগীতায় নগরীর ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তীব্র প্রতিযোগীতা শেষে ১ম হয়েছে সেন্ট জোসেফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ইরতিজা আবরার, ২য় হয়েছে খুলনা জেলা স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র সোয়াইব আহমেদ, ৩য় হয়েছে নিরালা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মো. খালিদ সাইফুল্লাহ। ১ম স্থান অধিকারীকে মেডেল, সনদপত্র ও ৩০ হাজার টাকার সমমূল্যের প্রাইজবন্ড, ২য় স্থান অধিকারীকে মেডেল, সনদপত্র ও ২০ হাজার টাকার সমমূল্যের প্রাইজবন্ড, ৩য় স্থান অধিকারীকে মেডেল, সনদপত্র ও ১০ হাজার টাকার সমমূল্যের প্রাইজবন্ড পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হয়। প্রতিযোগীতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন খুলনা তালিমুল মিল্লাত আলিয়া মাদ্রাসার আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুফতি মাওলানা মো. আব্দুল মজিদ ও খুলনা দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসার আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যা. মাওলানা মো. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগীতা করেছেন ব্রিটেন প্রবাসী আহসান কবির, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এস এম আরিফুল ইসলাম ও শেখ আবু বক্কর। এছাড়াও প্রতি বছরের ন্যায় হ্যানে রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ইউনিফর্ম (জামা, প্যান্ট, জুতা ও বেল্ট) বিতরণ করা হয়।