সকল অপকর্মের হোতা কে এই হাসান
দলে রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা-৪ ও ৫ আসনের যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর ও কদমতলী থানা এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করেতেন হাসান মিয়া। এসব এলাকায় চুরি-ছিনতাইসহ সকল অপরাধের গডফাদার হিসেবে ভূমিকা রাখে হাসান। এছাড়া বিভিন্ন বাড়িতে তালা ভেঙ্গে চুরি করে হাসানের মাধ্যমে চোরেরা পার পেয়ে যায়। কারণ পুলিশ চোরদের ধরে এবং হাসান সুপারিশ করে ছাড়িয়ে দেয়। এই সমস্ত এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ মাদক ব্যবসাও পরিচালনার মুলহোতা হাসান।
অভিযোগ আছে, যাত্রাবাড়ী, ফ্লাইওভার জুরাইন, রেল গেইট,পোস্তগোলা এলাকার মোবাইল চুরি ছিনতাই হয় তার সবই হাসানের কাছে জমা হয়ে থাকে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলে, বর্তমান শ্যামপুর থানার কিছু এস আই ও এ এস আই হাসানকে সর্ব প্রকার সাহায্য ও সহযোগিতা করে থাকে। হাসান এলাকার নিরীহ মানুষদের ব্ল্যাকমেইল করে এস আইদের অবৈধ ভাবে টাকা হাতিয়ে নিতে সহযোগিতা করে থাকে।
অনুসন্ধানে ও কিছু পত্রিকার সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের সোর্স পরিচয় দানকারী হাসানের অন্যতম সহযোগী আলমগীর। তার দলে রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য। প্রকাশ্যে তারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড- চাঁদাবাজি ছিনতাই, মোবাইল চুরি, দোকান চুরি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের সোর্স পরিচয়দানকারী হাসান মিয়া ও তার সহযোগী আলমগীর বখাটে কিশোরকে এক করে ২০-২৫ জনের একটি গ্যাং তৈরি করেছে। আর সে কিশোরদের দিয়েই সরবরাহ করে মাদক এবং চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজিসহ সকল প্রকার অপকর্ম।
ইতিপূর্বে হাসান বেশ কয়েকবার পুলিশ ও রাব সদস্যের হাতে ধরা পড়লেও কিছুদিনের মধ্যে জামিন নিয়ে এসে পুনরায় শুরু করে চাঁদাবাজি।
হাসান জুরাইন, পোস্তগোলা, মুরাদপুর সাবান ফ্যাক্টরী, খন্দকার রোড, জুরাইন রেলরোড, বউবাজার, ধোলাইপাড়, জুরাইন বালুর মাঠ,আর সিন গেট এলাকার ব্যবসায়ী, শিক্ষিত সমাজ ও শান্তি প্রিয় নিরীহ লোকদের কে টার্গেট করে পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে এবং নানাভাবে তার পালিত গ্যাং দিয়ে হয়রানি হেনস্তা করে অর্থ আদায় করে থাকে। আর এতে কেউ তার আদায়কৃত চাঁদা দিতে না চাইলে বা বাধা দিলে, হাসানের নিকটতম পরিচিত পুলিশ দিয়ে বিভিন্নভাবে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া বা তাদেরকে মাদকের ভয় দেখিয়ে তার স্বার্থ হাসিল করে।
পুলিশে দিয়ে ধরিয়ে দিতে দ্বিধাবোধ করে না। অনেক সময় এসব সোর্সরা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে মাদক, ফেন্সিডিল, গাঁজা, দিয়ে দোকানে রেখে ব্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে যাচ্ছে। এছাড়াও ওইসব এলাকায় পুলিশ সোর্স নামধারীরা নিজস্ব লোক দিয়ে চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজি এমনকি মাদকদ্রব্য বিক্রয় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে জানা যায়, হাসান ও আলমগীর কেরানীগঞ্জে বাসা ভাড়া করে থাকে। সে এলাকায় কিশোর গ্যাং নেতা। রাত দশটার পর জুরাইন রেল লাইন, বউ বাজার পোস্তগোলা, মুরাদপুর, মিষ্টির দোকানসহ অনেক এলাকায় চলাচল নিরাপদ না। মোবাইল টাকা পয়সা যা পায় জোর করে চাকুর ভয় দেখিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া মোবাইল ছিনতাইকারী সিন্ডিকেটও তার নিয়ন্ত্রণে। প্রতিনিয়ত মাসোয়ারা দিয়ে এসকল চোর ছিনতাইকারীরা রাস্তায় চলাচলরত যাত্রীদের হাত থেকে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার, মানিব্যাগ ছিনতাই সহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে থাকে। আর তাদের সকল প্রকার আইনের শেল্টার দিয়ে থাকে এই পুলিশের সোর্স নামধারী হাসান। কেউ কোথাও হাতে-নাতে ধরা পড়ে মামলায় জড়ালে তাদেরকে দ্রুত ছাড়িয়ে নেয় হাসান। আসলে হাসানের ক্ষমতার উৎস কোথায় তা আজও জানা যায়নি। হাসানের ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চায় না কেউ। হাসানের নামে শ্যামপুর থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত হাসান মিয়ার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে এ প্রতিবেদককে বলেন চুরি, মাদক, সরবরাহ, ছিনতাইয়ের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশে আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছে। আমি আগে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতাম, বর্তমানে আমি গাড়ি ভাড়ায় চালাই।
এ ব্যাপারে শ্যামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান ডিসি সার প্রধান নির্দেশ কোন প্রকার সোর্স পুলিশ বাহিনীতে থাকবে না । আমরা জনগণের সেবক জনগণই আমাদের সোর্স। কেউ পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন জায়গা থেকে স্বার্থ হাসিল করবে এটা মেনে নেওয়া যাবে না এমন কি যদি কোন পুলিশের সহযোগী সোর্স হিসেবে পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন । তিনি আরো বলেন প্রতিমাসে এলাকার এলআর সর্বসাধারণকে নিয়ে একটি আইনশৃঙ্খলা মিটিং করা হয় তার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে অভিযোগ শুনে তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমরা জনগণের সেবক আমরা জনগণের কাছের লোক আমরা জনগণের পুলিশ। আর যদি কোথাও কেউ কোন পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজ অথবা চাঁদাবাজি করে থাকে তাহলে তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়ার জন্য বলে দিয়েছেন। পুলিশের সোর্স মাদক ক্রয়-বিক্রয়ে জড়িত থাকলে সঠিক তথ্য প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এবং ডিসি স্যারের এ ধরনের কাজে এলাকার জনগণের মধ্যে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা , মানসিক শান্তি বিরাজ করছে।