ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আরও তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি থাকা চার জনের ডিএনএ পরীক্ষায় এই তিন জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

রোববার (০৯ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গ থেকে পুলিশ স্বজনদের মরদেহ হস্তান্তর করেছে।

একজনের মরদেহ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস।

শনাক্ত হওয়া তিনজন হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বড় চৌধুরী পাড়া এলাকার মৃত আবদুল আজিজের ছেলে শাহ আলম (৫৪), মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার ঝাপুয়া এলাকার তাজুল মুল্লুকের ছেলে মো. ইকবাল (২৭) ও কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের রোমাইপাড়ার মৃত আবু সৈয়দের ছেলে মেজবাহ উদ্দিন (৫০)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্জয় বিশ্বাস জানান, শাহ আলমের মরদেহটি তার ছেলে মামুনুর রশিদ, মো. ইকবালের মরদেহটি তার ভাই তারেক ও মেজবাহ উদ্দিনের মরদেহ ছেলে আবু সাইদ মো. জিসান গ্রহণ করেছেন।

তিনি জানান, গত ২৩ এপ্রিল একটি ট্রলার থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের পর ছয় জনের মরদেহ শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চার মরদেহের একাধিক দাবিদার থাকায় পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

এদিকে আলোচিত এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ছয়জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরা হলেন, মামলার প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার  গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার  দেলোয়ার হোসেন।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন আদালতে জবানবন্দি দেননি।

ট্রলার থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের পর ২৪ এপ্রিল পরিচয় শনাক্ত হওয়া ছয় জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা হলেন, মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে ট্রলার মালিক সামশুল আলম প্রকাশ সামশু, চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ, চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামের  মুসা আলীর ছেলে গণি ওসমান, একই ইউনিয়নের মোহাম্মদ হোসানের ছেলে নুরুল কবির।

গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা নামবিহীন ট্রলারটিকে নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল ট্রলার মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।