ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষে-আহত ১০ 

IMG-20251127-WA0051

‎‎মোঃ আবু সাইদ শওকত আলী,
খুলনা বিভাগীয় প্রধানঃ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্ধি ইউনিয়নের সামাজিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারে নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষে প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন।  প্রাথমিক ভাবে আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বর্তমানে বিএনপির দুটি গ্রুপের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। 

আর এ ঘটনায় বিএনপির দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একটি চক্র। স্থানীয়রা জানান , আওয়ামী লীগের যে সব নেতারা ৫ আগস্টের আগে এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করত, তারাই আবার এখন বিএনপির একটি পক্ষে যোগ দিয়ে সামাজিক বিরোধ ও সংঘর্ষে ইন্ধন দিচ্ছে। এমনকি, তারা সরাসরি সংঘর্ষে যুক্ত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ফুরসন্দি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে গুরুতর দুজন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে ফুরসন্দি গ্রামের শাহাবুর মোল্লার সমর্থক আল-আমিনের সাথে বিএনপি নেতা জাহিদ বিশ্বাসের সমর্থক ফিরোজের পারিবারিক দ্বন্দ্ব  বাধে। পরে পারিবারিক দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক গ্রুপিং  পরিণত হয়। সেসময় উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয় পড়ে। এতে উভয়নপক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সেসময় ২টি বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।‎

‎স্থানীয়রা আীও জানায় , দীর্ঘদিন ধরে ফুরসন্দি গ্রামের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা শাহাবুর মোল্লা ও জাহিদ বিশ্বাসের সমর্থকদের মাঝে বিরোধ চলে আসছিল। শাহাবুর মোল্লার দলীয় পদ নেই, তবে তিনি বিএনপির প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। অপর গ্রুপের জাহিদ বিশ্বাস ফুরসন্দি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক। তবে ৫ আগস্টের পরে ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতাদের নিজের গ্রুপে টেনে নেন শাহাবুর মোল্লা।

ফুরসন্দি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ বিশ্বাস বলেন, শাহাবুর মোল্লার সাথে আওয়ামী লীগের অনেকেই যোগ দিয়েছে। এরা সব ৫ আগস্টের পরের বিএনপি। বিএনপি করা তো দোষের না, একজন আওয়ামী লীগ থেকে বা অন্য দল থেকে এসে বিএনপি করতেই পারে। কিন্তু, বিএনপিতে এসে মারামারি সংঘর্ষ করার তো কোনো সুযোগ থাকা উচিত না। 

শাহাবুর মোল্লার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ফুরসন্দি ইউনিয়নের হুদা গ্রামের পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সামাজিক বিরোধের সূত্রধরে রাজনৈতিক দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।

প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নে এর আগেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতন, হামলা, মামলার শিকার হওয়া বিএনপি। নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। এ নিয়ে উভয় গ্রুপে প্রায়ই সংঘর্ষ ও বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।