নেত্রকোনায় সদর আ.লীগের নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ, বিব্রত আওয়ামী লীগ।

সোহেল মিয়া
নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ

নেত্রকোনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ‘পদবাণিজ্য’ বা কমিটিতে সদস্যপদ দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ নেওয়ার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মো. শাকের আহমেদ মঙ্গলবার জানান, গত রোববার এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগকারী আবদুল জলিল ঢাকার মতিঝিল এলাকায় একজন কম্পিউটার ব্যবসায়ী। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা সদর উপজেলার কুনিয়া গ্রামে। অভিযুক্ত নেত্রকোনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান একই গ্রামের বাসিন্দা।

থানায় লিখিত অভিযোগে আবদুল জলিল বলেন, ‘গত বছরের মার্চে মো. হাফিজুর রহমান নেত্রকোনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। এরপর সেই কমিটিতে সদস্য করার জন্য আমাকে প্রস্তাব দেন। যেহেতু আমি আওয়ামী পরিবারের লোক তাই কমিটির সদস্য হতে আমারও আগ্রহ ছিল।’

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘সদস্য হওয়ার জন্য আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়। যেহেতু আমাদের বাড়ি কাছাকাছি, তাই তার কথায় আস্থা রেখে আমি রাজি হই এবং তাঁকে ১ লাখ টাকা দিই। কমিটির কাগজ হাতে পেলে বাকি টাকা নেবেন বলে জানান। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও সদস্য হতে না পেরে সেই ১ লাখ টাকা ফেরত চাইলে তিনি গড়িমসি করতে থাকেন। বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। তাই এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’

তবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান খান অভিযোগ অস্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি পুরোপুরি মিথ্যা; সামাজিকভাবে আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যেই এই অভিযোগ করা হয়। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। যারা এই অভিযোগ তুলেছে, তাদের ডাকা হয়েছে। তাকে অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে।’

এ বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মানিক বলেন, ‘পুলিশের তদন্তে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা বলেন ঘটনাটি নেত্রকোণা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জা ও অপমানের। আমরা বিব্রতকর অবস্থায় অছি।
অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে ইমেজ সংকটে রয়েছে নেত্রকোনা আওয়ামী লীগ। ঘটনার সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচারের দাবি জানান তারা।

উল্লেখ্য যে গত বছরের ১ মার্চ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে নেত্রকোনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। পরে ২৮ ডিসেম্বর দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নেত্রকোনা সদর উপজেলা ও পৌর শাখার কমিটি স্থগিত করা হয়। ঊর্ধ্বতন কারও সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া গঠনতন্ত্র পরিপন্থী প্রক্রিয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার অভিযোগ তুলে ওই চিঠিতে দুই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শাতে বলা হয়। চিঠিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শাখা দুটির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।