উল্লাপাড়ায় ঘুষের অভিযোগ তোলায় শিক্ষিকা বরখাস্ত, এলাকায় তোলপাড়

IMG-20251117-WA0027

মোঃ লিটন সরকার,
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের বিনায়েকপুর দাখিল মাদ্রাসায় ঘুষের অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সুপার আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি, কর্তৃত্বের অপব্যবহার এবং অনিয়মের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করার পরপরই এক শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার ঘটনা স্থানীয়ভাবে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এনটিআরসি থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মোমেনা খাতুন–এর কাছ থেকে যোগদানের সময় সুপার আব্দুস সামাদ দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরবর্তীতে এমপিও করানোর কথা বলে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। শুধু তাই নয়, মাদ্রাসার অডিট সংক্রান্ত কাজে স্টাফদের কাছ থেকেও ১০ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মোমেনা খাতুন বলেন,
“আমি বৈধভাবে এনটিআরসি থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও সুপার বারবার টাকা দাবি করতেন। টাকা না দেওয়ায় আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করেন। বাধ্য হয়ে ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিই। এর পরের দিনই তিনি আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মাত্র এক দিনের নোটিশে বরখাস্ত করেন।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, সুপার আব্দুস সামাদ তাঁর স্ত্রীকে মাদ্রাসার সভাপতি করে প্রতিষ্ঠানে পারিবারিক আধিপত্য বিস্তার করেছেন। হাজিরা খাতা পর্যালোচনায় দেখা গেছে—সুপারসহ তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন শিক্ষক নিয়মিত অনুপস্থিত থাকেন। একাডেমিক কার্যক্রমের বড় অংশ পরিচালনা করছেন সুপারের ঘনিষ্ঠ শিক্ষক আব্দুস সালাম।

শিক্ষক অনুপস্থিতি, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে মাদ্রাসার শিক্ষার মান ভয়াবহভাবে অবনতি হয়েছে বলে জানান অভিভাবকরা। অনুপস্থিত শিক্ষকদের ক্লাস নিচ্ছে আয়া-পিয়নরা—ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় নেমে এসেছে মারাত্মক স্থবিরতা। স্থানীয়দের মতে, প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ধসের মূল কারণও এ অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলা।

এ বিষয়ে সুপার আব্দুস সামাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বিশ্বাস বলেন,
“অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান,
“বিষয়টি জানার পরই তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”