গোয়ালন্দে চিকিৎসকের মাথায় ‘অস্ত্র’ ঠেকানো অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর ছিনতাই হওয়া মুঠোফোন, দুই হাজার টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি ওই ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ‘খেলনা’ পিস্তল জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা হলেন—গোয়ালন্দ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড হাউলি কেউটিল গ্রামের মো. রনি (২৩), পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইমরান হোসেন (২৭) ও ওই ওয়ার্ডের নছর উদ্দিন সরদার পাড়ার রুবেল ফকির ওরফে সোনা (২৮)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ছিনতাইয়ের শিকার ওই চিকিৎসকের নাম মো. আবুল কালাম আজাদ। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত রোববার রাত আটটা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাঁর রাত্রিকালীন ডিউটি ছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি জরুরি বিভাগের পাশে চিকিৎসকদের কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় অতর্কিতভাবে দুই তরুণ তাঁর কক্ষে প্রবেশ করেন। আরেকজন দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। কী কারণে কক্ষে প্রবেশ করছেন জিজ্ঞাসা করলে প্রতি উত্তরে ‘যেখানে আছিস সেখানে দাঁড়া, নড়াচড়া করবি না, করলে মেরে ফেলব’ এই কথা বলেই একজন পিস্তল বের করে তাঁর মাথায় ঠেকান।

আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, তিনি ধাক্কা দিলে পিস্তল দিয়ে তাঁর মাথা ও হাতে আঘাত করেন ওই তরুণ। তিনি কক্ষ থেকে বের হতে গেলে আরেকজন চাকু বের করে কোপ দিতে যান। পরে তিনি দুই হাত ওপর তুলে ধরেন। এ সময় তাঁর কাছে থাকা স্মার্টফোন ও ছয় হাজার ছিনিয়ে নেন ওই তরুণেরা। এরপর কক্ষের দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে বেরিয়ে যান তাঁরা। তাঁর চিৎকার শুনে সহকর্মীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসকের বর্ণনা অনুযায়ী স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় গতকাল সোমবার দুপুরে প্রথমে রনিকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। রনির দেওয়া তথ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইমরান ও রুবেল ফকিরকে খুঁজতে থাকে পুলিশ। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় গতকাল বিকেলে কুমড়াকান্দি এলাকা থেকে ইমরানকে আটক করা হয়। এ সময় ইমরানের দেখিয়ে দেওয়া নিজেদের রান্নাঘর থেকে কালো রঙের খেলনা পিস্তলটি জব্দ করা হয়। এ ছাড়া গতকাল রাত আটটার দিকে গোয়ালন্দ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের পাশ থেকে রুবেল ফকিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ নিজেদের মতো করে অপরাধীদের খুঁজতে থাকে। চিকিৎসকের বর্ণনা অনুযায়ী পুলিশ গতকাল দুপুরে প্রথমে রনিকে মুঠোফোনসহ আটক করে। পরে চিকিৎসক রনিসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলার পর রনির দেওয়া তথ্যমতে বিকেলে ইমরানকে ও রাতে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।