ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যুৎবিল পরিশোধের পরেও মিটার খুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

IMG-20251127-WA0001

মোঃ আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের অব্যবস্থাপনা, হিসাবত্রুটি ও নানা অনিয়মের কারণে সাধারণ গ্রাহকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিল পরিশোধ করার পরও গত ২৫ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে বহু গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, রুহিয়া জোনাল অফিসে দীর্ঘদিন ধরেই বিলিং ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি ও অসঙ্গতি চলছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু কর্মী যথাযথ কাগজপত্র যাচাই না করেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছেন। মধুপুর এলাকার গ্রাহক রবিনাস বর্মন বলেন, আমি ২০১৮ সাল থেকে পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহক। আগস্ট মাসে আমার বিল আসে ১৩৮৯ টাকা এবং সেপ্টেম্বরে ১৩১৭ টাকা। কিন্তু অক্টোবরে কোনো ব্যবহার না থাকা সত্ত্বেও আমাকে ৫২১৪ টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে অফিসে গেলে তারা বলে, একবার বিল হয়ে গেলে সংশোধনের সুযোগ নেই। মধুপুরের আরেক ভুক্তভোগী ধৈর্য লাল জানান, আমার সাধারণত মাসে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকার বিল আসে। কিন্তু হঠাৎ জোনাল অফিস থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় আমার বিল ১০ হাজার টাকা। অফিসে গেলে বিল রাইটার একটি টেবিল থেকে বলে এই বিল পরিশোধ না করলে লাইন বিচ্ছিন্ন করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিলের কপি চাইলে তা দেওয়া হয়নি। পরে তাদের একজন জাহিদ নামে ব্যক্তি ১৯৬৬ টাকার একটি নতুন বিল তৈরি করে আমাকে দেয়, তবে কোনো অভিযোগ বা মিটার যাচাই করা হয়নি। ভুক্তভোগী মুক্তারাম রায় অভিযোগ করে বলেন, ২৫ নভেম্বর অফিসে গিয়ে বিল পরিশোধ করার পরও আমার বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। বাধা দিলে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার কথা বলে তারা আমার বাড়ি থেকে মিটার খুলে নিয়ে যায়। মিটার তো আমার টাকায় কেনা এভাবে নিয়ে যাওয়া কতটা যৌক্তিক? বাধা দিলে আমাকে গ্রেফতারের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। রুহিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম গগন সাহা বলেন, ২৫ নভেম্বরের অভিযানে ৯৫৩ টি মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং ১০ টি মিটার খুলে নেওয়া হয়েছে। যেখানে গণ্ডগোল ছিল, সেসব জায়গার মিটার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে খুলে নেওয়া হয়েছে এবং ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সেই মিটার ১০ টি সাথে নিয়ে গেছেন। নিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ মিটার খুলে নেওয়ার বিষয়ে আমি কোনো অনুমতি দিইনি। আমার দায়িত্ব ছিল অভিযান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা। মিটার খুলে নেওয়া বা না নেওয়া বিষয়টি আমার কাজের অংশ নয়। আমি বিষয়টি ডিজিএম গগন সাহার সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখব। স্থানীয় শতাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই বিদ্যুৎ বিভাগ কর্মীরা মিটারগুলো খুলে নিয়ে গেছে এখন আবার কেউ দায় স্বীকার করছে না। আমাদের টাকায় কেনা মিটার কেন খুলে নেওয়া হলো এবং কোন আইনে নেওয়া হলো এটি আমাদের জানতে হবে। আমরা মিটার ফেরত দেওয়া ও সংযোগ দ্রুত পুনঃস্থাপনের দাবি জানাই।