রুহিয়ায় কমলা ও মাল্টার বাম্পার ফলন জয়নালের বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়

IMG-20251125-WA0003

মোঃ আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন ১৪ নং রাজাগাঁও ইউনিয়নের টাঙ্গন ব্যারেজের পুর্বপার্শে উত্তর বঠিনা গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরেজীবি জয়নাল আবেদীনের কমলা ও মাল্টা বাগানে ঝুলছে থোকায় থোকায় বিভিন্ন জাতের কমলা ও মাল্টা। হলুদ-কমলা রঙে সজ্জিত পুরো বাগান দেখার মতো মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আকৃষ্ট করছে স্থানীয়সহ দূর-দূরান্তের ভ্রমণ-পিপাসুদের। বিগত ছয় বছর পূর্বে (২০১৯ সালে) শখের বসে বাড়ির পাশে এক বিঘা জমিতে কমলা ও মাল্টা চারা রোপন করেন এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব জয়নাল আবেদীন।শুরুতেই মাল্টার ফলন একটু কম হলেও এবার মাল্টার বাম্পার ফলনে রীতিমতো আনন্দিত তিনি। তার বাগানে বর্তমানে ৫৫০ টি কমলা ও মাল্টা গাছ রয়েছে। এ মৌসুমে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকার কমলা ও মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। বাগানে ভিড় করছেন নানা বয়সী দর্শনার্থীরা। পঞ্চগড় জেলার বোদা থানা হারিপুকুর থেকে আসা জয় রায় বলেন, এত সুন্দর কমলা বাগান ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মারেয়া ইউনিয়নের গেদিপাড়া থেকে আসা প্রহল্লাদ ও রিপন রায় জানান, আমরা শুনেছিলাম রুহিয়া থানাধীন টাঙ্গোর নদীর পাশে একটি কমলা ও মালটার বাগান রয়েছে দেখতে অনেক সুন্দর। তাই আজ আমরা পাঁচজন বন্ধু একত্রিত হয়ে আটোয়ারী আলোয়া খোয়া রাসমেলায় এসেছিলাম, মেলা ঘুরেফিরে এই কমলা ও মাল্টা বাগানে এসে সত্যি মুগ্ধ হয়েছি। এখানে বাগান থেকে সরাসরি তরতাজা ফল দার্জিলিং কমলা প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, চায়না মেন্ডারিন কমলা প্রতি কেজি ২৫০ টাকা এবং মাল্টা প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরাসরি এমন বাগানের ছেঁড়া কমলা ও মাল্টা কিনে ভালো লাগলো। দেবিগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে আসা সুদেব চন্দ্র রায় বলেন, ভারতের দার্জিলিংয়ে কমলা দেখেছি, কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে এভাবে ঝুলন্ত কমলা সত্যিই অবাক করেছে। গাছ থেকে সরাসরি কমলা পেড়ে খাওয়ার অভিজ্ঞতায় রোমাঞ্চিত। বাগানের শ্রমিক রফিকুল ইসলাম জানান, চার বছর বয়সী এই বাগানে এবার অভূতপূর্ব ফলন এসেছে। প্রতিদিনই বাগানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। কম দামে বিক্রি করায় ক্রেতারা সন্তুষ্ট এবং মালিকও ভালো লাভের আশা করছেন। ছোট্ট সেই ৫ বছরের শিশু সামিউল বলেন, আমি আমার এক বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি আমি এখানকার কমলা খেয়ে ভালো লাগলো। আব্বুকে এখান থেকে কমলা নিয়ে যেতে বলবো। জয়নাল আবেদীন বলেন, ২০১৯ সালে শখের বসে সাময়িক ১০০ টি কমলা ও মাল্টা গাছ দিয়ে এই কমলা ও মাল্টা বাগান শুরু করেছি। আজ এই শখের বাগানটিতে মোট ৫৫০ টি গাছ রয়েছে। এখন এইখান থেকে আমার ভালো আয়ের পথ হয়ে উঠেছে। গত বছরে ৯ লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করেছি। এ বছর আশা করি ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার ফল বিক্রি করতে পারব। নতুন যদি কেউ আমার মত উদ্যোক্তা হতে চায় তবে তাদের আমি আমার এখান থেকে চারা দিয়ে সার্বিক পরামর্শ সহ নতুন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে চাই। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক মোঃ মাজেদুল ইসলাম বলেন, জেলায় ছোট বড় মিলে ৮ টি কমলা বাগান রয়েছে। জমির পরিমাণ ৮.২ হেক্টর। জমি উপযোগী হওয়ায় জেলায় কমলা ও মাল্টা বাগানের আবাদ ক্রমশ বেড়েই চলছে। বাগান করে সফল হচ্ছেন কৃষকেরা। কমলা চাষে যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তারা আমরা কৃষি অফিস থেকে তাদের সব ধরণের সহযোগীতা করছি।