চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যাংক এশিয়ার দৌরাত্ম্যে হয়রানির শিকার ভাতা সুবিধাভোগীরা
আহসান হাবীব, (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ব্যাংক এশিয়ার গাফিলতির কারণে ভাতা উত্তোলনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন অসংখ্য সুবিধাভোগী। মৃত স্বামীর প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা তুলতে গিয়ে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে হয়রানির শিকার হয়েছেন মনাকষা ইউনিয়নের বিধবা পারভিন।
তিনি জানান, “আমার প্রতিবন্ধী স্বামীর মৃত্যুর সোয়া দুই বছর পার হলেও ব্যাংক এশিয়ার গাফিলতির কারণে ভাতা বাবদ ১৫,৩৯৩ টাকা তুলতে পারিনি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগৃহীত সব কাগজপত্র ব্যাংক এশিয়া রানীহাট্টি শাখায় জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু কর্মকর্তা সোনিয়া খাতুন হিসাব খুললেও কোনো রিসিভ দেননি। দেড় মাস ধরে শাখায় ঘুরেও কোনো সমাধান পাইনি।”
একই অভিজ্ঞতার কথা জানান প্রতিবন্ধী সুফিয়া খাতুন ও বৃদ্ধা জিনিয়ারা বেগম (৭৫)। তারা বলেন, “ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে হয়রানি করছেন। শত অনুরোধেও সমাধান মিলছে না।”
উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু শাহবাজপুর ইউনিয়নেই শতাধিক মৃত ব্যক্তির নমিনীরা ভাতা উত্তোলন করতে পারছেন না। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নেও একই পরিস্থিতি।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যানরা জানান, “ব্যাংক এশিয়া সুবিধাভোগীদের হয়রানি করছে, কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। এটি প্রশাসনের বিষয়।”
শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক উম্মে কুলসুম জানান, “আমরা নিয়ম অনুযায়ী কাগজপত্র পাঠাই। ব্যাংক এশিয়াকে একাধিকবার অনুরোধ করেও কোনো সাড়া পাইনি। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে—ভবিষ্যতে আর ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে নতুন কোনো হিসাব খোলা হবে না।”
এদিকে শিবগঞ্জ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা সাধ্য অনুযায়ী সেবা দিচ্ছি। জনবল সংকটের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে, যা দ্রুত সমাধান হবে।”
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজাহার আলি বলেন, “ব্যাংক এশিয়ার হয়রানির কারণে নতুন কোনো হিসাব তাদের মাধ্যমে খোলা হবে না। ইতোমধ্যে মৃত ব্যক্তিদের নমিনীদের মাধ্যমে নতুন হিসাব খুলে টাকা উত্তোলনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।”
