দলীয় নাম প‌রিচয় ভা‌ঙি‌য়ে বেপ‌রোয়া‌ খুলনার বি এন পি নেতা তফ‌সির : নেয়া হয়‌নি সাংগঠ‌নিক কোন ব‌্যবস্থা

IMG-20251105-WA0000

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী তফসির আহমেদ এর বিরুদ্ধে দলীয় (বিএনপি) সাইনবোর্ড দেখিয়ে জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত ২ ভাড়াটে দোকান দখল করার সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পর থেকে যেসব চাঞ্চল্যকর সব তথ্য আসতে থাকে তা রীতিমতো যেকারো আকাশ ছোঁয়ার গল্পের মতো। নানা সময়ে তিনি রাজনৈতিকভাবে সফল হতে যেসব কৌশল অবলম্বন করে আসছেন তা নিঃসন্দেহে একজন পেশাদার হোতার কাজ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্ত এখ‌নো পর্যন্ত তার বিরু‌দ্ধে নেয়া হয়‌নি কোন দলীয় বা সাংগঠ‌নিক ব‌্যবস্থা, যা নি‌য়ে‌ হতাশ ভুক্ত‌ভো‌গিরা।
একাধিক ভুক্তভোগীর মধ্যে মো. ইকবাল হোসেন নামে এক ঠিকাদার বলেন, মো. আলী আজমের মতো আমার দোকানটি ভাড়া নিয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ তৈরি করে দখলে নেয় ডাক বাংলা ১৩ ক্লে রোডস্থ মেসার্স খুলনা সোফা কর্ণার নামে দোকানটি। ১৯৯৩ সালে পারিবারিকভাবে ৫০ টাকার স্ট্যাম্পে আমার কাকা আমাকে লিখে দেন। ইতিপূর্বে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির মূল মালিক খুলনা সদর থানাধীন রামচন্দ্র লেনের আবুল হাশেম বিশ্বাস। তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত তফসির দোকান খেকো ছিলেন বর্তমান দোকান মালিক ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেনের ২০ বছরের ভাড়াটিয়া। মাসিক চুক্তিতে দীর্ঘদিন পর গত ২০১২ সালে জালিয়াতি করে দোকান লিখে নেয় এবং উল্টো দোকান মালিককেই ২০২১ সালে তিন তিনটা ভূয়া মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। যাতে কোন অবস্থাতেই দোকান দখল করতে না পারে। এই মামলা এখনো চলমান রয়েছে। বর্তমানে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে আমাদের জিম্মি করে রেখেছে। আমি তাই সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী মো. আলী আজম পুনরায় বলেন, নগরীর ডাকবাংলা মার্কেটে অবস্থিত আমার দোকানটি মূলত জোরপূর্বক তফসির দখলে নিয়েছে আমার ভাই আওয়ামী লীগ করতেন এজন্য। আমি তো কোন দোষ করিনি। তিনি বর্তমানে দূর্বল মানুষের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছেন। তার পুত্রবধু ডাঃ লাইলাতুল জোহা মিথুনকে গত ২৪ সাল থেকে অংশীদার ব্যবসায়ী চুক্তিতে মাসিক দশ হাজার টাকায় ভাড়া দেই আমি। ৫ আগস্টের পর বিএনপির সাইনবোর্ড দেখিয়ে কিভাবে রাতারাতি তিনি দোকান মালিক হয়ে গেলেন বলে দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি। অবশেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে তদন্ত সাপেক্ষে তফসিরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান।
তাছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চলে হত্যা, ডাকাতি সহ নানা চাঞ্চল্যকর অপরাধের তালিকায় তৎকালীন শীর্ষে অবস্থান ছিল এই গাজী তাফসির এমন বক্তব্যে শাহপুর ০৫ নং ওয়ার্ডের এফ এম মুসলিম উদ্দিন এর পুত্র সাবেক খুলনা জেলা ছাত্রদলের চারুকলা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নূরী আলম সিদ্দিকী বাপ্পীর ভাই এফ এম হেলাল নিহত বাপ্পীকে ২০০৩ সালের ৩রা মার্চ রাতে একই উপজেলার শাহপুর বাজারের মসজিদ গলিতে কিভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার সরজমিনে তথ্য প্রকাশ করে।তিনি আরো জানান, নির্বাচন ও রাজনৈতিক কেন্দ্রিক গাজী তফসির আহমেদ এর বিরুদ্ধে তৎকালীন দক্ষিণ বঙ্গের কুখ্যাত সন্ত্রাসী মৃনাল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বাবুকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে ডুমুরিয়া উপজেলার ঠুকরা এলাকার নিরঞ্জন মার্ডার, ২০০২ সালে একই উপজেলা ০৩ নং উদাঘরা ইউনিয়নের রাজু হায়দার মার্ডার,এবং ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য ও খুলনা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ডুমুরিয়ার কৃতি সন্তান মোল্লা সিরাজ মার্ডারে অভিযুক্ত। সে অর্থের বিনিময়ে সবকিছু করে থাকে তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। তবে ভুক্তভোগীর অভিযোগের সত্যতা জানতে কল করলে তিনি বলেন, আমাকে কল দেয়ার আগে আপনার জেলা পরিষদে খোঁজ নেয়া উচিত ছিল। দোকান সহ কোন অপরাধের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে অস্বীকার করেন। অবশেষে তিনি এই তথ্য কোথায় পেলেন এবং কেন ফোন করা হয়েছে সেটা বলেও ভীষণ দাম্ভিকতা দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ব্যাপারে খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, দোকানটা মো. আলী আজমের তবে গাজী তফসির আহমেদ বিএনপির নাম ব্যবহার করে দোকানটি জোরপূর্বক দখলে নিয়েছেন বলে জেনেছি। এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুঠোফোনে জানান, উক্ত দখল সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি অবগত নন। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তবে এ ব্যাপারে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মন্টু মুঠোফোনে বলেন, আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন কেন্দ্রে প্রেরণ করেছি। আশাকরি শীঘ্রই হয়তো দল সাংগাঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নেবেন ।