নাটোরে সিংড়ায় সহকারী শিক্ষকের মিথ্যা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে স্কুলের নৈশপ্রহরীর আত্মহত্যা,শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা।
মোঃ নাহিদ ইসলাম,নাটোর জেলা ক্রাইম রিপোর্টারঃ
শিক্ষকের দেওয়া মিথ্যা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে নাটোরের সিংড়া উপজেলার আগমুরশন গ্রামের আশিক হোসেন (৩০) নামের এক নৈশপ্রহরী আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় মৃতের মা রানী বেগম শনিবার রাতে সিংড়া থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আগমুরশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিনকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, মৃত আশিক হোসেন ছিলেন সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের আগমুরশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী কাম-দপ্তরি এবং আগমুরশন গ্রামের স্থানীয় সেলিম হোসেনের ছেলে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার। ওই দিন সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন সুদের কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য মেয়ের কানের দুল বিদ্যালয়ে এনে শ্রেণিকক্ষের ড্রয়ারে রেখে পাঠদান করছিলেন। বিদ্যালয় ছুটি শেষে তিনি বাড়ি চলে যান। পরে ফিরে এসে দুলটি খুঁজে না পেয়ে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষকদের বিষয়টি জানান।
পরে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন নৈশপ্রহরী আশিক হোসেনকে নিজের বাড়িতে ডেকে এনে চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে আশিক অপমানিত ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় কলিয়া বাজারে গেলে এলাকাবাসীর মুখে চুরির অপবাদ শুনে আশিক গভীরভাবে মর্মাহত হন। একপর্যায়ে তিনি বাজারেই বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে বিকাল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, “আমি মেয়ের দুল বিদ্যালয়ের ড্রয়ারে রেখে ভুলে গিয়েছিলাম। পরে গিয়ে না পেয়ে বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানাই। তবে ওই নৈশপ্রহরীকে আগেও একটি ঘটনায় শোকজ করা হয়েছিল।
প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, “এক শিক্ষকের স্বর্ণ চুরির বিষয় নিয়ে আশিককে ডেকে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, অপমান করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
আশিক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুজ্জামান বলেন, “আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
