রাজশাহীর তানোরে ৬ মাস পর এসিল্যান্ডের যোগদান, ১৫ দিন পরও মিলছে না সেবা।

IMG_20251030_120741

বিশেষ প্রতিবেদক:

দীর্ঘ ছয় মাসের শূন্যতা শেষে অবশেষে রাজশাহীর তানোর উপজেলায় নতুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করেছেন শিব শংকর বসাক। তিনি ৪০তম বিসিএস-এর একজন কর্মকর্তা এবং এর আগে বান্দরবন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত ১৬ অক্টোবর তিনি তানোরে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেন। সাধারণ মানুষ আশা করেছিল—দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে এবার ভূমি সেবায় নতুন গতি আসবে।
কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো চিত্র। যোগদানের পর দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো নিয়মিত কাজ শুরু হয়নি উপজেলা ভূমি অফিসে। এসিল্যান্ড কোনো ফাইলপত্রে স্বাক্ষর না করায় নামজারি, মিসকেসসহ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ফাইল অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এতে একদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, অন্যদিকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে প্রয়োজনীয় ভূমি সেবা থেকে।
অফিসে অনিয়ম ও দেরিতে উপস্থিতি
২৯ অক্টোবর (বুধবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তানোর উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়—অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে, আশপাশে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি নেই। পরে সকাল ১০টার দিকে তালা খোলা হলেও স্টাফদের বেশিরভাগই সাড়ে ১০টার পর অফিসে আসেন।
অন্যদিকে এসিল্যান্ড শিব শংকর বসাক সকাল ৯টার পরিবর্তে আসেন সাড়ে ১১টার দিকে। অফিসে এসে কিছুক্ষণ চা-চক্র ও আলাপচারিতা শেষে বিকেল ৩টার মধ্যেই অফিস ত্যাগ করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
ভূমি সেবায় অচলাবস্থা
দীর্ঘদিন শূন্য থাকা পদে নতুন এসিল্যান্ড যোগ দিলেও তাঁর নিষ্ক্রিয়তা ও স্টাফদের অবহেলায় পুরো ভূমি অফিসের কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা। নামজারি, মিসকেস ও ভূমি সংক্রান্ত অন্যান্য ফাইলের কাজ বন্ধ থাকায় জনগণ ভোগান্তিতে পড়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না পেয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে।
জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা
তানোরের সেবা বঞ্চিত মানুষজন বলছেন—তাঁরা নতুন এসিল্যান্ডের কাছে অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ১৫ দিনেও কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন না দেখে তাঁরা এখন হতাশ। তাঁদের দাবি, উর্দ্ধতন প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপে ভূমি অফিসকে সচল করা হোক, এবং কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে আরও আন্তরিক ও জবাবদিহিমূলক ভূমিকা নিশ্চিত করা হোক।