কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বেহাল দশা, রোগী হয়রানী

IMG_20251029_213503

খুলনা বিভাগীয় প্রধানঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশা, ২ বছরেও চালু হয়নি নতুন ভবন, বসবাস করছে ইদুর-বাদুর, চুরি হচ্ছে মূলবান সরঞ্জায়াদি, সন্ধ্যা আসলেই মাদকের আড্ডা খানায় পরিনত হয় ভবণটি।  সংশ্লিষ্ট সুত্রে থেকে জানা যায় চিকিৎসা সেবা উন্নত করার জন্য ২০২৩ সালে ২৬ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয় ৫ম তলা ভবণটি। ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাস্তবে তার কোন কার্যক্রম নেই বরং আগের তুলনায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুন। ডাক্তারের চরম সংকট, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জায়াদির অভাব, ঔষধ সংকট,  নিন্মমানের খাবার,  অপরিষ্কার ও দূর্গন্ধ, মশা মাছির উপদ্রব, আর সব সময় চোর আতঙ্কে রাত দিন থাকতে হয় রোগী আর তার স্বজনদের। হাসপাতালটিতে ১৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মাত্র ২ জন। তারাও নিয়মিত থাকেন না বলে জানা গেছে। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) দিয়ে চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম। জরুরি বিভাগও সামাল দিচ্ছেন সেকমো দিয়ে।  রোগীদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে নিজের বাসায় বা বিভিন্ন কিনিকে রোগী পাঠিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েরও অভিযোগ আছে সেকমো ডাক্তারের বিরুদ্ধে।  অন্য দিকে আগত রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সরঞ্জায়াদি না থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে। কোটচাঁদপুর উপজেলা ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ উপজেলায় ১ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বাস করে। ভৌগোলিক কারণে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫টি উপজেলার মাঝে অবস্থিত। ঝিনাইদহের সদর, মহেশপুর, কালীগঞ্জ , যশোরের চৌগাছা ও চুয়াডাঙ্গা সদরের অনেকে এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। যে কারণে রোগীর চাপ থাকে বেশি। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসা নিতে আসেন ৭০০ থেকে ৮০০ জন,  আর ভর্তি থাকেন ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী। এই বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করণে ভবন নির্মাণের কাজ  শেষ হয়েছে ২ বছর হলো। প্রশাসনিক অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকে আছে রোগীদের ভাগ্য।  ২৮ অক্টোবর সরজমিনে দেখা যায় শিশু-বৃদ্ধ সব বয়সের রোগী এসেছেন চিকিৎসা নিতে, বহির্বিভাগের কগুলোর সামনে লম্বা লাইনে দাড়িয়ে আছেন রোগী ও তার স্বজনরা। কোনো চিকিৎসক না থাকায় উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সেকমোদের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধা রেশমার সাথে কথা বললে তিনি জানান মেলাদিন অসুস্থ আছি বাইরে ডাক্তার দেখানোর ক্ষমতা নেই, তাই আজ হাসপাতালে আসলাম দুই চারটে ঔষধ দেছে, এখন বাড়ি চলে যাচ্ছি। রোগী ও তাঁদের স্বজনদের অভিযোগ, এভাবে আর কতদিন চলবে। এর একটা প্রতিকার হওয়া দরকার। হাসপাতালটির শিশু ওর্য়াডসহ বিভিন্ন ওর্য়াড ঘুরে দেখা যায় ওর্য়াডে রোগীদের চরম ভিড়। শয্যা সংকটে ফোরে বিছানা করেছেন অকেনেই।  অথচ ১০০ শয্যার নতুন ভবনটি পরিতক্তভাবে পরে আছে। শিশু ওর্য়াড থেকে শুরু করে সব গুলো ওর্য়াড দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, বাথরুম গুলো ব্যবহারের অনুপযোগী , আছে খাবারের মান নিয়েও অভিযোগ। কিন্তু কর্তৃপরে কোনো পদপে নেই।   কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমানুল্লাহ আল মামুন  বলেন বর্তমানে আমাদের  চিকিৎসক সংকট চলছে। ১৯ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ আছেন মাত্র ৫ জন। যাঁদের মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, একজন ডেন্টাল সার্জন ও একজন অবেদনবিদ, অন্য ২ জন হাসপাতালের ওয়ার্ড গুলোর ভর্তি রোগী দেখায় ব্যস্ত। জনবলসহ প্রশাসনিক অনুমোদনের পর নতুন ভবণটি চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।