নিরপেক্ষতার আইকন এক দায়িত্বশীল সাহসী ম্যজিস্ট্রেট জনাব ইমদাদুল হক।

IMG-20251027-WA0016


লুৎফুর রহমান হৃদয়, স্টাফ রিপোর্টার নেত্রকোনাঃ


ইমদাদুল হক তালুকদার বহু গুণের অধিকারী, বাংলাদেশের প্রশাসনিক অঙ্গনে কিছু নাম আছে, যেগুলো উচ্চারণ করলে মানুষ এখনো সাহস, সততা ও দায়িত্ববোধের উদাহরণ টানে। এমনই একজন কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদার যিনি বারবার প্রমাণ করেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানই একজন প্রকৃত সরকারি কর্মকর্তার মূল পরিচয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনটি ছিল ২০২৪ সালে। কুমিল্লা ৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য বাহারউদ্দীন বাহার এবং প্রয়াত আফজাল খানের কন্যা সীমা আফজাল খান। নির্বাচনের আগের রাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রশাসন দায়িত্ব দেয় অদম্য ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদারকে।
ভোরবেলায় ক্যান্টনমেন্ট ফাঁড়ির আইসি ইন্সপেক্টর মামুনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কালীরবাজার ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রে নিজ হাতে ভোটসামগ্রী পৌঁছে দেন। ভোট শুরুর পরপরই সন্ত্রাসীরা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালালে ইমদাদুল হক দৃঢ় হাতে পরিস্থিতি সামাল দেন। এক পর্যায়ে এমপি বাহাউদ্দীন বাহার নিজে অস্ত্রধারী বাহিনী নিয়ে কেন্দ্র দখলে নামলে ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদ দ্রুত র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি কেন্দ্র উদ্ধার করেন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
এই ঘটনার পর কুমিল্লাবাসীর কাছে ইমদাদুল হক তালুকদারের নামটি হয়ে ওঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের প্রতীক।
এর আগেও ও পরেও এমন বহু অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই ম্যাজিস্ট্রেট।
শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী এমপি নিক্সন চৌধুরীর কর্মীকে প্রকাশ্যে গ্রেফতার করে তিনি সাড়া ফেলেছিলেন সারাদেশে। কুমিল্লায় ৩০ হাজার সিএনজি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা, ডিমের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান, পদ্মায় নিষিদ্ধ জনসমাগম ঠেকানো কিংবা ঈদে মাওয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ভাড়া সিন্ডিকেট বিরোধী অভিযান সব ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন অম্লান দৃষ্টান্ত।
নেত্রকোণায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সহিংসতামুক্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপহার দেন তিনি। প্রশাসনিক দক্ষতা ও নিরপেক্ষ ভূমিকার মাধ্যমে তিনি ভেঙে দেন সহিংস নির্বাচনের দীর্ঘ রেকর্ড।
কেন্দুয়া পৌরসভার টিআর প্রকল্পে কাজ না করেও বিল ছাড়ের প্রচলন বন্ধ করে দুর্নীতিবিরোধী এক অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি। এ জন্য তাকে রাজনৈতিক চাপ, অপপ্রচার ও নানা হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে। তবুও তিনি কখনও আপস করেননি সত্য ও ন্যায়ের পথে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাক্তন ছাত্র ইমদাদুল হক তালুকদার শুধু প্রশাসক নন, তিনি লেখক, বিতার্কিক, রক্তদাতা, সামাজিক আন্দোলনের কর্মী ও শর্টফিল্ম নির্মাতা।
জাতীয় গণমাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখির মাধ্যমে তিনি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছেন।
সততা, সাহসিকতা ও দায়িত্ববোধের সমন্বয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক তালুকদার আজ জনগণের আস্থার প্রতীক। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে যখন ভীতুতা ও আপসের সংস্কৃতি বাড়ছে, তখন তাঁর মতো নির্ভীক কর্মকর্তার উপস্থিতি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য আশার আলো।
অন্যায়ের কাছে নতি নয় এই বিশ্বাসেই অদম্য ইমদাদুল হক তালুকদার এগিয়ে চলেছেন দেশের সেবায়।