দোয়ারায় উগ্রও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত।

IMG-20251026-WA0013

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার ইউনিয়নের হকনগর বাজার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসকন কর্তৃক ইমাম নির্যাতিত ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করার প্রতিবাদে এবং ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করেন বাঁশতলা ইমাম- মুয়াজ্জিন ঐক্য পরিষদের সদস্যবৃন্দরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামের প্রতিনিধিবৃন্দ, এলাকাবাসী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় তারা ইসকন তুই সাবধান হুশিয়ার সাবধান, বাংলার জমিনে ইসকনের জায়গা নেই। দিয়েছিতো রক্ত আরো দিবো রক্ত এমন স্লোগান দিতে দিতে মসজিদের আশপাশের সীমানার ঘুরে বেড়ান।
মিছিল শেষে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন, ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ৩ দফা দাবি তুলে ধরেন।
১/- উগ্র সংগঠন ইসকনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।
২/- অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যাসহ ইসকন সংগঠিত সব অপরাধের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৩/- সাম্প্রদায়িক উসকানিদাতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।শনিবার (২৫ শে অক্টোবর) আসরের নামাজ শেষে হকনগর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে ইমাম- মুয়াজ্জিন ঐক্য পরিষদ এবং ছাত্র-জনতা ও স্থানীয় মুসল্লিরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বৃহত্তর বাঁশতলা ইমাম-মুয়াজ্জিন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শামছুল হক নো’মানী বলেন, ৫ আগষ্টের পর ইসকন নামক জঙ্গি সংগঠনে আবির্ভাব ঘটেছে। তারা এ দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি করে মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতে চায়। তাদের হীন চক্রান্তের নিন্দা জানাই। তিনি আরো বলেন, হিন্দু মুসলিম আমরা ভাই ভাই, তারা আমাদের ভাত্রিত্ব নষ্ট করতে চায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এলাকার আলেমসমাজ এবং বিভিন্ন মসজিদের ইমাম খতিব ও মুয়াজ্জিনগনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ছাত্র জনতা, এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মুফতি আব্দুল মালেক, হাফিজ কয়েছ আহমদ, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, হাফিজ সিরাজুল ইসলাম, মাও. মাহবুব আহমদ, মাওলানা শুয়াইব আহমদসহ অন্যান্য সংগঠনের সদস্যরা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মাদিনাতুল উলুম জুমগাও নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম ও তরুণ বক্তা মাওলানা শহীদুল ইসলাম,
তিনি তার বক্তব্যে বলেন,
বাংলাদেশে যত জঙ্গি সংগঠন রয়েছে, অনতিবিলম্বে সকল সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ৫ ই আগষ্ট যে ভাবে ছাত্র-জনতা মিলে হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে, সে ভাবে আমরা সবাই মিলে ইসকন সংগঠনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর বাঁশতলা ইমাম মুয়াজ্জিন ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা নুর উদ্দিন তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম আমরা কখনো হিন্দুদের নিয়ে বাড়া বাড়ি করি না। হিন্দু মুসলিম সম্পর্ক নষ্ট করতে একটা দল নানান অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এ দেশের খোদ সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই ইসকনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
এসময় বাশতলা হোসাইনিয়া ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব মুফতী আব্দুল মালেক বলেন, ইসকন একটা সন্রাসী সংগঠন। ৫ আগষ্টের পর এ সংগঠন নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে। একটার পর একটা অঘটন ঘটাচ্ছে। খুব দ্রুতই এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাতে আজকে আমরা এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাশতলা হুসাইনিয়া ইসলামিয়া আননপারা মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মুফতী আব্দুর রশিদ সিরাজি বলেন, আমাদের আন্দোলন ইসকনের বিরুদ্ধে, হিন্দুদের বিরুদ্ধে নয়। ইসকন সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে, যা প্রমাণ করে তারা উগ্রপন্থী। চট্টগ্রামে আদালত থেকে জামিন নামঞ্জুরের পর ইসকনের সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা করে একজন আইনজীবীকে হত্যা করেছে এবং ধর্ষণ করেছে আমার এক বোনকে, অপহরণ ও শারীরিক নির্যাতন করেছে আমার এক ভাইকে।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, ইসকনকে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করা হোক এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা হোক। ‘উগ্রবাদী ইসকনকে বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ করা হলেও বাংলাদেশে এটি অবাধে চলছে। নেতার গ্রেপ্তারের পর তারা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা করেছে। এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে ইসকনকে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে, না হলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হবে।
এছাড়াও অন্যান্য বক্তাতারা বলেন, একটা দল বাংলাদেশের হিন্দু মুসলিম ভাইদের সম্পর্কের ফাঁটল ধরানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যদিয়ে তারা এই দলের রাজনীতিতে সরব করতে চায়। সুযোগ তারা আর পাবে না। প্রতিবাদ সভায় অবিলম্বে ইসকন সহ সারা দেশের জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।