ম্যাজিস্ট্রেট থাকা সত্ত্বেও আত্মহত্যার মামলা থানায় লিখে এসেছিলেন সালমানের বাবা।
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু হয় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেন অভিনেতার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। তবে এতে দ্বিমত পোষণ করেন সালমান শাহর পরিবার। তাদের দাবি, সালমান শাহকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সম্প্রতি এই মামলা নিয়ে ফের আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
২০২০ সালে সামিরা হক দীর্ঘ আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে। সেই সাক্ষাৎকারের সালমান শাহরের সাবেক স্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি সালমান শাহর মৃত্যুর দায় থেকে আপনাকে মুক্তি দিয়েছে। কিন্তু আপনার কি মনে হয়, সাধারণ মানুষ কিংবা সালমান-ভক্তদের কাছ থেকে দায়মুক্তি পেয়েছেন? সালমান শাহর মৃত্যুর পেছনে আপনার হাত রয়েছে বলে মনে করেন ভক্ত ও সাধারণ মানুষের একটি অংশ। আবার ২৪ বছরে এর কোনো প্রমাণও নেই। এটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে সামিরা হক দাবি করেছিলেন, প্রথম থেকেই আমি বলে আসছি, এটা আত্মহত্যা ছিল। সালমানের বাবা নিজে ম্যাজিস্ট্রেট থাকা সত্ত্বেও উনি নিজে গিয়ে আত্মহত্যার মামলা রমনা থানায় লিখে এসেছেন। ওনারা নিজেরা পোস্টমর্টেম করেছেন, তার পরে আবার পোস্টমর্টেম করেছেন সিলেটের ওসমানী মেডিকেলে এবং প্রথম দিন করা হলো ঢাকা মেডিকেলে। সবকিছু ওনাদের নিয়ন্ত্রণে হয়েছে, আমার নিয়ন্ত্রণে হয়নি। রিপোর্ট ওনাদের হাতেই আসছে, আমার হাতে না। আমি বারবার ২৪ বছর ধরে একই কথা বলছি। ভক্তরা যারা এখানে বিশ্বাস করছে বা করছে না, তাদের মধ্যে বয়স হচ্ছে ১৬ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা। এরা বড় হয়েছে শুনে, কেউ হয়তো মাকে কাঁদতে দেখেছে, কেউ বড় বোনকে কাঁদতে দেখেছে ইমনের জন্য। ওরা যখন এই স্মৃতি নিয়ে বড় হয়, ওরা বিশ্বাস করতে থাকে যে সালমানকে হত্যা করা হয়েছে। এটা ওদের দোষ না। ওরা জানে না, ওরা তো তখন ছিল না। ওরা ইমনকে নিজের চোখে দেখেছে, আমাকে দেখেছে, ওরা কিছুই দেখেনি। ওরা কিছু না দেখে কীভাবে ওরা একটা জাজমেন্ট পাচ্ছে। এটা উচিত হবে না। একজনকে নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের জানা উচিত যে আমরা আসলে কতটুকু সত্যি জানি। আমি অনুরোধ করব, যারা সালমানভক্ত, যারা না বুঝে বলছে, আমি কিন্তু ওদের দোষ দিই না। তাদের ওপর আমার কোনো কষ্ট নেই। আমার এটা খুব ভালো লাগে যে তার এখনো এত ভক্ত আছে, এটা আমার একটা গর্বের জায়গা। কিন্তু আমি চাইব, ওরা এটা বুঝুক যে ইমন কাকে বেশি ভালোবাসত, ইমনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কী ছিল। ওটাকে তারা পছন্দ করুক বা অপছন্দ করুক, তাদের মানতেই হবে সেটা আমিই ছিলাম।
