সীমান্তে ভালোবাসার মেলা: দশ বছর পর দুই বোনের অশ্রুসিক্ত পুনর্মিলন।

প্রদীপ কুমার রায় ক্রাইম রিপোর্টার লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের দুর্গাপুর-মোগলহাট সীমান্তের ধরলা নদীর তীরে রবিবারের সকালটা ছিল ভিন্ন আবেগে মোড়ানো। দুই দেশের হাজারো ভক্ত-দর্শনার্থীর ভিড়ের মাঝেও থমকে যায় সময়—দুই বোনের চোখে জল, বুকভরা দীর্ঘশ্বাস আর এক দশকের অপেক্ষার অবসান।
বাংলাদেশের আদিতমারী উপজেলার দেওডোবা গ্রামের শুসিলা রানী (৬০) ও ভারতের কোচবিহার জেলার নিয়তি রানী (৫০)—দশ বছর পর দেখা পেলেন সীমান্তের বার্ষিক বাংলাদেশ-ভারত মিলন মেলায়।
কেউ কিছু বলতে পারেননি, শুধু কেঁদে ফেললেন একে অপরের কাঁধে মাথা রেখে।
শুসিলা রানী এনেছিলেন মিষ্টি, ইলিশ মাছ আর টাঙ্গাইলের শাড়ি; নিয়তি রানী এনেছিলেন মিষ্টি, মসলা ও শাড়ি। উপহার বিনিময়ের সময়ও থেমে থাকেনি অশ্রুধারা।
“দশ বছর পর বোনের দেখা পাইয়া বুকটা জুড়ায়া গ্যালো,” বললেন শুসিলা রানী।অপরদিকে নিয়তি রানীর কণ্ঠে কৃতজ্ঞতার সুর—“ত্রিশ বছর আগে ভারতে গেছিলাম, এখন শুধু দিদিই আছে। দশ বছর পর দেখা পেয়ে মনটা হালকা হইয়া গ্যাইল।”
প্রতি বছরই সীমান্তের ৯২৭ নম্বর পিলারের কাছে ভারতের দিনহাটার দড়িবাস এলাকায় শ্রীশ্রী মা বৃদ্ধেশ্বরী দেবীর পূজা উপলক্ষে বসে এই মিলন মেলা।
পূজার বিশেষত্ব—পুরোহিত আসেন বাংলাদেশ থেকে, আর পূজারী ভারতের। দুই দেশের মানুষ একসাথে পূজা দেন, প্রসাদ খান, আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
বাংলাদেশের পুরোহিত বিকাশ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন,
“এই মন্দির প্রাঙ্গণ দুই দেশের ভক্তদের মিলনের স্থান। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে হয়, আর্থিক সহযোগিতাও দু’দেশের মানুষ মিলেই দেয়।”
ভারতের পূজারী জ্যোতিষ চন্দ্র রায় যোগ করেন,
“পুরোহিত বাংলাদেশে, পূজারী ভারতে—এই সম্প্রীতিরঅপরদিকে নিয়তি রানীর কণ্ঠে কৃতজ্ঞতার সুর—“ত্রিশ বছর আগে ভারতে গেছিলাম, এখন শুধু দিদিই আছে। দশ বছর পর দেখা পেয়ে মনটা হালকা হইয়া গ্যাইল।”
প্রতি বছরই সীমান্তের ৯২৭ নম্বর পিলারের কাছে ভারতের দিনহাটার দড়িবাস এলাকায় শ্রীশ্রী মা বৃদ্ধেশ্বরী দেবীর পূজা উপলক্ষে বসে এই মিলন মেলা।
পূজার বিশেষত্ব—পুরোহিত আসেন বাংলাদেশ থেকে, আর পূজারী ভারতের। দুই দেশের মানুষ একসাথে পূজা দেন, প্রসাদ খান, আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
বাংলাদেশের পুরোহিত বিকাশ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন,
“এই মন্দির প্রাঙ্গণ দুই দেশের ভক্তদের মিলনের স্থান। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে হয়, আর্থিক সহযোগিতাও দু’দেশের মানুষ মিলেই দেয়।”
ভারতের পূজারী জ্যোতিষ চন্দ্র রায় যোগ করেন,
“পুরোহিত বাংলাদেশে, পূজারী ভারতে—এই সম্প্রীতিরবন্ধনই এই মেলার মূল আকর্ষণ।”
রবিবার দিনভর মেলায় অংশ নেন ২০ হাজারেরও বেশি ভক্ত ও দর্শনার্থী। কেউ আসেন পূজায় অংশ নিতে, কেউ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে। বিকেল গড়ালে সবাই ফিরে যান, পেছনে ফেলে যান এক দিনের আনন্দ, অশ্রু আর ভালোবাসার স্মৃতি।
মোগলহাটের প্রশান্ত সেন বলেন, “ভিসা বন্ধ থাকায় এখন এই মেলাই আত্মীয়দের দেখা করার একমাত্র সুযোগ।”
রংপুরের সুধীর চন্দ্র গুপ্ত বলেন, “সীমান্তে সবাই কাঁদে, কিন্তু সেই কান্নায় আনন্দের সুর লুকানো থাকে। এটা শুধু দেখা নয়, এটা সীমান্ত পেরোনো ভালোবাসার চিত্র।”
বিজিবি ও বিএসএফের সতর্ক নজরদারিতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় দিনের পূজা ও মেলা।
আর এই একদিনের উৎসবেই যেন মুছে যায় সীমান্তের বিভাজন, জেগে ওঠে মানবতার অনন্ত সেতুবন্ধন।