কেন্দুয়ায় আওয়ামী মহিলা লীগের নেত্রী তাহমিনা এখন উপজেলা মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ময়মনসিংহ বিভাগের বিশেষ রিপোর্টারঃ
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ৩ নং দলপা ইউনিয়নে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি ঘোষিত কেন্দুয়া উপজেলা মহিলা দলের অনুমোদিত কমিটিতে আওয়ামী লীগ ঘরানার এক নেত্রীর নাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়- গত ১৫ মার্চ ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, কেন্দুয়া উপজেলা শাখার অনুমোদিত কমিটিতে তাহমিনা আক্তার নামের এক নেত্রীর নাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয় কিন্তু স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা দাবি করছেন, তাহমিনা আক্তার অতীতে আওয়ামী মহিলা লীগের নেত্রী ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বহু নেতাকর্মীকে তিনি হয়রানি করেছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে- তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, বিভিন্ন ধরনের হয়রানি এবং দলের ব্যানার-পোস্টারে আওয়ামী নেতাদের ছবি ব্যবহার করেছেন। এতে কেন্দুয়া উপজেলা ও দলপা ইউনিয়নের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষোভ ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।
বিষয়টি উল্লেখ করে ৩ নং দলপা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আব্দুল লতিফ বিল্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান রুবেল ২১/০৫/২০২৫ ইং যৌথভাবে এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন—“আওয়ামী ঘরানার তাহমিনা আক্তারকে বিএনপির কোনো পদে রাখা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। তাই আমরা তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাই-আগস্টের পূর্বে তাহমিনা আক্তারের আওয়ামী নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার ও পোস্টারের প্রমাণও সংগঠনের হাতে রয়েছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা দ্রুত এই বিষয়ে জেলা ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে দলের ভাবমূর্তি ও ঐক্য অক্ষুণ্ণ থাকে।
দলপা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্টু ব’লেন- ইউপি সদস্য তাহমিনা আক্তার আওয়ামী শাসনামলে বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করে।
আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি নুরুল ইসলাম এর পূত্র ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন আলম এর সাথে আতআত করে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
কেন্দুয়া উপজেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি মিনা আক্তার বলেন- তাহমিনা আক্তার আওয়ামী লীগের শাসনামলে এই উপজেলায় মহিলা লীগের নেতৃ হিসেবে পরিচিত ছিল। আমিও এই ইউনিয়নের নেতৃ, আমি জানি সে আওয়ামীলীগ করতো। তাহমিনার জন্য আমার দলের নেতাকর্মীরা বাসায় ঘুমাতে পারেননি। সে বাদী হয়ে আমার ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিও করেছেন। এখন আমার দলের নেতা ও নেত্রীদের সহযোগিতায় উপজেলা মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আমি সভাপতি হিসেবে এর নিন্দা ও ঘৃণা জানাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- আমি উপজেলা মহিলা দলের কমিটির বিষয় কিছু জানি না, আমাকে নিয়ে কমিটি অনুমোদন করেন নাই, কাকে সদস্য করেছে তাও জানি না, সকল সদস্য করেছে আমার উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নুর নাহার আক্তার চায়না।
উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নুরনাহার আক্তার চায়না বলেন- আমার জানামতে তাহমিনা আক্তার সে কোন আওয়ামী লীগের বা মহিলা লীগের নেতৃ ছিল না। তবে সে যেহেতু জন প্রতিনিধিঃ সেই হিসেবে সকল মানুষের সাথে মিলে থাকতে হয়। আওয়ামী লীগের ভালো মন্দ লোক
জনের সাথে চলছেই। উপজেলা মহিলা দলের কমিটিতে তাহমিনা’র নামটা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্টু ভাই দিয়ে ছিল।
ইউপি সদস্য ফারুক মিয়া এক কথার প্রসংগে ব’লেন- গত জুন জুলাই ২০২৫ ইং আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আওয়ামী লীগের ৬ জন ইউপি সদস্যদের কোন ধরনের কাজ বা (প্রজেক্ট) দেয়া হয় নাই। সেই তালিকায় তাহমিনা আক্তার এর নাম ছিল। এখন সে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছে বলে তাকে এখন একটি (প্রজেক্ট) রাস্তা দেওয়া হয়েছে দলপা- ইটাউতায়।
ইউপি সদস্য হেবলু বলেন- সে আওয়ামী লীগের লোক ছিল, ২৪ জুলাই এর পর সে বিএনপির কিছু লোকের যোগসাজশে বিএনপি হয়ে গেছে। এর আগে তার ফেইসবুক প্রোফাইলে আওয়ামী লীগ নেতৃ হিসেবে অনেক পোস্টে ছিল, সেটি আমি নিজে কিছু দিন আগে ডিলিট করে দিয়েছি।