দুই জন্ম তারিখ নিয়ে শৈলকুপার আদিল উদ্দীন কলেজে চাকরী করছেন এক ল্যাব এসিস্ট্যান্ট।

IMG-20251014-WA0033

মোঃ আবু সাইদ শওকত আলী,
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মালিথিয়া আদিল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের ল্যাব এসিস্ট্যান্ট মৌসুমি রানী দাসের বিরুদ্ধে জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। শুধু জন্মনিবন্ধনই নয়, মৌসুমির একাধিক জন্ম তারিখ ও ভিন্ন ভিন্ন নামে এসএসসির সনদপত্র মিলেছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে মৌসুমি দাসের সরকারি বেতনের অংশ।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মৌসুমি দাস ২০২৩ সালে মালিথিয়া আদিল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজে নিয়োগ পান এবং ১৩ মাস সরকারি বেতনের অংশ উত্তোলন করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে শৈলকুপার নবদ্বয় বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। সার্টিফিকেট ও ভোটার তালিকায় তার জন্ম সাল ১৯৮৩ আছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে শিক্ষকদের ইএফটির মাধ্যমে বেতন চালু হলে মৌসুমি দাসের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি নাম পরিবর্তন করে মিতু দাস ধারণ করেন এবং শৈলকুপা বিএলকে বাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০২০ সালে আবার এসএসসি সমমান পরীক্ষায় পাস করেন। ওই সনদে তার জন্মতারিখ ১০ বছর কমিয়ে ১৯৯২ সাল করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, শৈলকুপার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানের পুত্রবধূ রওশন আরা আফরোজ সভাপতি হওয়ায় ১৫ লাখ টাকার নিয়োগ বানিজ্য করা হয়। বেতন বন্ধ হওয়ার কারণে তাই চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জালিয়াতির মাধ্যমে মৌসুমি দাসকে মিতু দাস বানিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদান করেন।  

শৈলকুপা উপজলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত জানুয়াতি মাসে মৌসুমি দাস পরিবর্তিত কাগজপত্র দিয়ে নিজেকে মিতু দাস বানানোর জন্য এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেন। কিন্তু তার নামে একাধিক সনদ থাকা ও বয়স কমানোর দুরভিসন্দি বুঝতে পেরে গত সেপ্টম্বর মাসে তার আবেদন বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন।

অভিযুক্ত মৌসুমি দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “অনেকেই তো বয়স কমিয়ে এনআইডি করছে, তাই আমিও করতে চাচ্ছি। একবার রিজেক্ট হয়েছে তাতে কি ? আমি আবার এনআইডি সংশোধনের আবেদন করবো। আমি ১২/১৩ মাস তো ১০ হাজার ২০০ টাকা করে বেতন তুলেছি। চাকরীর ক্ষেত্রে তো এটা করলে সমস্যা নেই”।

এ বিষয়ে শৈলকুপা মালিথিয়া আদিল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ রোকনুজ্জামান জানান, মৌসুমি ও মিতু দাস একই ব্যক্তি। তার চাকরী দিয়েছিলেন আ’লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান। তিনিই মৌসুমি দাসকে মিতু দাস বানিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়েছেন। এই সনদ তিনি কি ভাবে দিলেন আমার প্রশ্ন ? অধ্যক্ষ জানান, এখন তার বেতন বন্ধ। চাকরিও আর ফিরে পাবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।