ধর্ষণ মামলা সাজিয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর গ্রামছাড়া করার অভিযোগ, গোটা এলাকায় নিন্দা

IMG-20250930-WA0051

মোঃ আবু সাইদ শওকত আলী,
খুলনা বিভাগীয় প্রধানঃ


ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দেবতলা গ্রামে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা সাজিয়ে রিপন কাজী নামে এক যুবককে ফাঁসিয়ে তার ঘরবাড়ি ভাংচুর ও তার পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে। এরকম অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন রিপন কাজী। রিপন কাজী ঐ গ্রামের আহাতাব কাজীর ছেলে।

লিখিত বক্তব্যে রিপন কাজী জানান, বিগত ২০২৪ সালের ২৮ জুন দেবতলা গ্রামের রবিউল কাজীর বড় মেয়ে প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে বগুড়ার শিহাব নামে এক ছেলেকে নিজ বাড়ি দেবতলা গ্রামে নিয়ে আসে। তারা বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক গড়ে তুলে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করতে থাকেন।

বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে স্থানীয় মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলামসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা রবিউল কাজীর বাড়িতে গিয়ে যুবক শিহাব সম্পর্কে জানতে চান। শিহাব প্রথমে নিজেকে সেনাবাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন। এ সময় পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তিনি মার্কেটিংয়ে কাজ করেন বলে জানায়। শিহাব মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় গ্রামের লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে দু’জনকে বিয়ে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে ছেলেটি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় আমি রিপন কাজী শিহাবকে থাপ্পড় মারি।

রবিউল কাজীর মেয়ের প্রেমিকাকে থাপ্পড় মারার কারণে ঐ পরিবারটি রিপন কাজীর উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকী দেয়। এরই জের ধরে ২০২৫ সালের ৩ মার্চ রবিউল কাজীর ১১ বছর মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে ধর্ষণ মামলা সাজিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে উত্তাল হয়ে পড়ে দেবতলা গ্রাম। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় রবিউল তার সামাজিক দলকে সঙ্ঘবদ্ধ করে আমার বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে।

এ ঘটনার পর থেকে আমি স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বাড়ি ফিরতে পারছি না। মিথ্যা ধর্ষণ মামলার বাদী রবিউল ও তার ভাতিজা শিমুল কাজী প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকী দিচ্ছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

ইতিমধ্যে পুলিশী তদন্তে মামলাটি মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অমিত কুমার ঘোষ চলতি বছরের ২৫ জুলাই আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করেছেন। ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের কোন আলামত মেলেনি বলে পরীক্ষাকারী চিকিৎসক ডাঃ সুলতানা মেফতাহুল জান্নাত ১৫ মার্চ আদালতে পাঠানো এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

মিথ্যা ধর্ষণ মামলার বিষয়ে বাদী রবিউল কাজী জানান, ধর্ষণ মামলাটি মিথ্যা নয়। ঘটনাটি সত্য ছিল। কিন্তু ধর্ষণের ১১ দিন পর মামলা ও ১২ দিন পর ডাক্তারী পরীক্ষা করায় রিপোর্ট পক্ষে আসেনি। টাকা দিয়ে মেডিকেল রিপোর্ট আসামীর পক্ষে নিতে পারেন বলেও সন্দেহ করেন। বিষয়টি সত্য প্রমাণ করতে তিনি ডিএনএ টেষ্ট করবেন বলেও জানান।