যোহরান মামদানিকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার।

20250929_184513

হাকিকুল ইসলাম খোকন,বাপসনিউজঃ

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র প্রার্থী যোহরান মামদানিকে হত্যার হুমকি প্রদানকারি জেরমি ফিস্টেল (৪৪)কে টেক্সাসের প্ল্যানো সিটি থেকে গ্রেফতারের পর ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এনে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছিল। তাকে এক লাখ ২৫ হাজার ডলারের বন্ডে জামিন প্রদানের পর ১৯ নভেম্বর কোর্টে হাজিরার নোটিশ ধরিয়ে দেয়া হয়। খবর আইবিএননিঊজ।ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন লাভের পর থেকেই (জুন ও জুলাই মাসে) জেরমি ই-মেইল এবং টেলিফোনে যোহরানকে সপরিবারে হত্যার হুমকির পাশাপাশি মুসলিম বিদ্বেষী হুমকি-ধামকি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক স্টেটের এ্যাসেম্বলীম্যান যোহরান মামদানি সিটি মেয়র পদে লড়ছেন এবং আসছে নভেম্বরের ৪ তারিখের নির্বাচনে একই পদে অপর প্রার্থীগণের চেয়ে অনেক বেশী পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন বলে সবগুলো জরিপে উদঘাটিত হয়। বিজয়ী হলে যোহরান হবেন নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলমান মেয়র। যোহরান হচ্ছেন নিউইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টের প্রথম সদস্য যিনি গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রথম মুখ খুলেছেন এবং মেয়র হিসেবে বিজয়ী হলে নেতানিয়াহুকে (যুক্তরাষ্ট্রে এলে) যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গ্রেফতারের অঙ্গিকার করেছেন।

কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী মেলিন্ডা ক্যাটজ এ প্রসঙ্গে ১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্প্রতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচিত একজন কর্মককর্তাকে হত্যার হুমকিসহ ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে স্টেট এ্যাসেম্বলীম্যান যোহরান মামদানির অফিসের টেলিফোনে। টেলিফোনে মেসেজ রাখা হয়েছে উগান্ডায় ফিরে যাবার জন্যে। অণ্যথায় তার মাথায় গুলি করে হত্যা করা হবে, তার বাড়ি ও পরিবারের ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ রাখা হয়েছে, আমেরিকা ত্যাগ করা পর্যন্ত তার প্রতিটি পদক্ষেপ অনুসরণ করা হচ্ছে, সর্বোপরি সে এবং তার স্বজনেরা মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছেন। ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী ক্যাটজ উল্লেখ করেছেন, আমি অত্যন্ত খোলামেলাভাবে সকলকে জানিয়ে দিতে চাই, যে কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে হুমকি প্রদানের ব্যাপারকে আমরা খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়ে থাকি, এবং আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ঘৃণা এবং ধর্মান্ধতার প্রশ্রয় নেই।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ফিস্টেলকে টেক্সাসে গ্রেফতার করা হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর। ফিস্টেল এহেন হিংসাত্মক হুমকির মেসেজ সর্বপ্রথম রাখেন ১১ জুন। সেখানে বলা হয়েছে, হেই যোহরান, কেউ তোমাকে গুলি করে হত্যার আগেই তোমাকে উগান্ডায় ফিরে যাওয়া উচিত। তা না করলে তোমার পরিবারকেও হত্যা করা হবে। কারণ, এদেশকে কখনোই মুসলমানেরা নিজের দেশ ভাবে না। তারা আমাদের মূল্যবোধের সাথে যায় না। ইতিমধ্যেই তোমার ইহুদি বিরোধী মন্তব্য/মতামত আমরা শুনেছি। চুপ করো। যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলে যাও। জুলাই মাসের মধ্যে বেশ ক’বার টেলিফোনে হুমকির পাশাপাশি যোহরানের অফিসে ই-মেলেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়। ১৮ জুন অপর এক মেসেজে যোহরানের গাড়িতে বোমা পেতে রাখার কথাও জানিয়ে দেয়া হয়। এরপরই নিউইয়র্ক পুলিশের ‘হেট ক্রাইম টাস্ক ফোর্স’ দফতর তদন্তে নেমেছিল। যোহরান জন্মেছেন উগান্ডায় এবং সেখান থেকেই মা-বাবার সাথে যুক্তরাষ্ট্রে এসে বসতি গড়েছেন।

ফিস্টেলের গ্রেফতারের সংবাদ জানার পর যোহরানের নির্বাচনী প্রচার টিমের মুখপাত্র ডোরা পিকেচ বৃহস্প্রতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, জনপ্রতিনিধিকে উপর্যুপরি হত্যার হুমকি প্রদানের ব্যাপারটিকে যতটা গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত ছিল ততটাই পালন করেছে কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট এটর্নীর অফিস, এজন্যে আমরা মেলিন্ডা ক্যাটজের প্রতি কৃতজ্ঞ। যদিও এহেন হত্যার হুমকি-ধমকির ঘটনাগুলো খুবই স্বাভাবিক। তবে তাকে শক্তহাতে দমণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে ফিস্টেলকে সর্বোচ্চ ১৫ বছর জেলে থাকতে হবে বলে ডিস্ট্রিক্ট এটর্নীর সহকর্মীরা জানিয়েছেন।