ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬০০ কেজি সরকারি চাল জব্দ: খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে কালোবাজারির অভিযোগ।

মোঃ জানে আলম রনি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ১৮ সেপ্টেম্বর: ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আনন্দবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬০০ কেজি সরকারি চাল জব্দ করেছে সদর উপজেলা প্রশাসন। এই ঘটনা সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত চালের অনিয়ম ও কালোবাজারির চিত্র নতুন করে সামনে এনেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত এক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১২ বস্তা সরকারি চাল (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে মোট ৬০০ কেজি) জব্দ করা হয়। ছানা খাঁ নামক এক ব্যক্তি এই চালগুলো আনন্দবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিলেন।
অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য:
চালসহ আটক ছানা খাঁ দাবি করেছেন, তিনি চালগুলো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন।
এ বিষয়ে ইউএনও সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়া জানান, সরকারি চাল কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টা দণ্ডনীয় অপরাধ। তিনি আরও বলেন, দরিদ্র জনগণের প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে। জব্দকৃত চাল সরকারি গুদামে জমা দেওয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এদিকে, মাছিহাতা ইউনিয়নের বিএনপির আহ্বায়ক আবু সায়েদ খন্দকার স্বীকার করেছেন যে তার ছেলে এবং ৫ নং ওয়ার্ডের ধনু মেম্বার চাল বিলি করে থাকেন। তবে তিনি চাল বিক্রির কথা অস্বীকার করে অভিযোগ করেন যে কিছু অসাধু ব্যক্তি তার পেছনে শত্রুতা করছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ধনু মেম্বারকে (কাছাইট পূর্ব পাড়া -৫ নং ওয়ার্ড) ফোন করা হলে তিনি থানায় আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন যে ধনু মেম্বারের সহযোগিতায় চাল বিলি করা হয়, কিন্তু সঠিকভাবে বিলি করা হয় না এবং প্রকৃত প্রাপকরা চাল পাচ্ছেন না। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক সময় সরকারি চাল অসহায় মানুষের কাছে না পৌঁছে সরাসরি বাজারে চলে যায়, যার ফলে প্রকৃত অভাবীরা বঞ্চিত হন।
এই ঘটনা সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির স্বচ্ছতা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।