বগুড়ার শিবগঞ্জে কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রী-ছেলেকে হত্যা করে মোটরসাইকেল ও অর্থ লুট।

মোঃ হোসেন আলী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি:
বগুড়ার শিবগঞ্জে মা-ছেলে কুপিয়ে হত্যা ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শিবগঞ্জ উপজেলার সাদুল্যাপুর বটতলা পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাদুল্যাপুর বটতলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী গত ১০ বছর হলো জীবিকা নির্বাহ করতে কুয়েত পাড়ি জমান। তাদের সংসার জীবনে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। প্রবাসী ইদ্রিস আলীর স্ত্রী রানী বেগম (৩৫) ও ছেলে ইমরান হোসেন (১৮) কে নিয়ে বসবাস করতেন। এর আগে কয়েক বছর পূর্বে ইদ্রিস আলীর চাচা তো ভাই খোকা মিয়া মারা যান। মৃত খোকা মিয়ার হাসান নামের ১ পুত্র কে পালিত সন্তান হিসেবে লালনপালন করেন রানী বেগম। হাসানের বয়স আনুমানিক (১৭ বছর)। ইদ্রিসের পরিবারে হাসানকেও নিজের সন্তানের মত দেখতেন ইদ্রিস ও তার স্ত্রী রানী বেগম। নিহত ইমরান হোসেন বগুড়ার নিশিন্দারা ফকির উদ্দিন স্কুল ও কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। গতকাল ছিল তার প্রথম ক্লাস। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল ইদ্রিস আলীর সংসার। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে সবাই বাড়ীর দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা জানান, রাত ১২টার পর হঠাৎ সাউন্ড বক্স বাজানোর শব্দ শোনা যায়। এরপর মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ীর দরজা খোলা থাকলেও অনেকেই বুঝতে পারেননি ভিতরে তাদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সম্ভাব্য সময়ে গৃহবধূ রানী বেগম সহ পরিবারের কারো কোন সাড়া মিল ছিল না। একপর্যায়ে প্রতিবেশী ১ গৃহবধূ বাড়ীর ভিতরে গিয়ে ডাকাডাকি করলে গৃহবধূ রানী বেগমের রক্তাক্ত নিথর মৃত দেহ বারান্দায় পরে থাকতে দেখে চিৎকার করেন। এরপর অন্যান্য প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘরের ভিতরে একই কায়দায় পুত্র ইমরান হোসেনের গলা কাটা মরদেহ দেখে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ কে অবহিত করেন। পরে পুলিশ এসে তাদের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেন। পরে ক্রাইম সিন এর সদস্য এসে হত্যা কাণ্ডে আলামত সংগ্রহ করে ২ টি মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে এঘটনার পর আকষ্মিকভাবে একই সাথে থাকা লালিত সন্তান হাসান আলী নিখোঁজ ছিল। সেই সাথে নিহত ইমরানের মোটরসাইকেল ও টাকা লুট হয়েছে বলে নিহতের কন্যা ইলা খাতুন বলেন। পরে পুলিশ বগুড়া থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসান আলীকে আটক করে তাদের হেফাজতে নেয়। এ বিষয়ে শিবগঞ্জ ও সোনাতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, ধারনা করা হচ্ছে, রাতের কোন এক সময় কে বা কারা তাদেরকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। নিহতদের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিভিন্ন বিষয় মাথায় নিয়ে কাজ কারছে পুলিশ। খু*নীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।