৬ মাসে সারা দেশে সাংবাদিক হামলা ১৫৪ নিহত ১ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার ১২৪৯

নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার

গণপিটুনি ৫৮টি

বিশেষ প্রতিনিধি ; এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ৬ মাসে সারা দেশে ৫৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৩ জন। এছাড়া এই সময়ে ১২৪৯ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৩৯ জন। এদের মধ্যে ৮৪ জন নারী ও শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছেন ২৩ জনকে যাদের মধ্যে শিশু ১২ জন।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) ২০২৩ সালের ষান্মাসিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং এইচআরএসএস এর তথ্য অনুসন্ধানী ইউনিট ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে জুন এ ছয় মাসে ৯৬ টি হামলার ঘটনায় ১৫৪ জন সাংবাদিক হামলা, নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম নিহত হয়েছেন। গত ছয় মাসে সাংবাদিক আহত হয়েছেন অন্তত ৮৪ জন, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ৬০ জন, হুমকির শিকার হয়েছেন ৬ জন ও গ্রেফতার ৪ জন। একই সময়ে আশঙ্কাজনকভাবে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর অধীনে দায়ের করা ৩৫টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছেন ৪২ জন এবং অভিযুক্ত করা হয়েছে ১০৪ জনকে। 

গত ছয় মাসে উদ্বেগজনকভাবে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪২০টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৮ জন ও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৮৮৮ জন। তাছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির দ্বারা ২০০৯ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি গ্রেফতারের শিকার হয়েছে। 

এ সময়ে ৪২ টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় গাজীপুরে শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলামসহ নিহত হয়েছে ১৬ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন। এছাড়াও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক ২৮ টি হামলার ঘটনায় ১৩ জন বাংলাদেশি নিহত এবং ১৪ জন আহত ও ৬ জন গ্রেফতার হয়েছেন। 

ছয় মাসে ১২৪৯ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৩৯ জন, যাদের মধ্যে আশঙ্কাজনকভাবে ৩১৭ জন (৫৯%) ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। ৮৪ জন নারী ও শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছেন ২৩ জনকে যাদের মধ্যে শিশু ১২ জন। ৩৮৫ জন নারী ও শিশু যৌন নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন, এর মধ্যে শিশু ২২৭ জন।  যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৬ জন নারী এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩২ জন ও আত্মহত্যা করেছেন ৪ জন। পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ১৩৬ জন, আহত হয়েছেন ৫৭ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ৫৬ জন নারী। এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৪ জন নারী।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগনের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাবে। তাই “হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির” পক্ষ থেকে সরকারকে মানবাধিকার রক্ষায় দায়ীত্বশীল ভূমিকা পালন করতে এবং দেশের সকল সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও দেশি-বিদেশী মানবাধিকার সংগঠন গুলোকে আরো সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাচ্ছে।