স্কুলছাত্রী আনিকা হত্যার বিচার দাবীতে মনোহরদীতে মানববন্ধন

মো.এমরুল ইসলাম
বিশেষ প্রতিনিধি,নরসিংদীঃ

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ছাত্রী সামিয়া আলম আনিকার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

বৃহস্পতিবার(২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে নিহত আনিকার মা সাবিকুন নাহার ডেইজি, বিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক মো. হামিদুল হক, শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শিক্ষার্থী মো. আতিকুর রহমান,মোসা. ফাতেমা আক্তার বক্তব্য দেন।

এসময় আনিকার মা বলেন, আনিকাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

প্রায় একমাস আগে হত্যাকাণ্ড ঘটলেও এখনো আমরা বিচারের কোনো অগ্রগতি দেখছি না।’ হত্যার সাথে জড়িত শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিসহ এইভাবে আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয় সে আকুতি জানান তিনি।

উল্লেখ্য,গত ৪ নভেম্বর দুপুরে মনোহরদী পৌর শহরের সরকারি কলেজসংলগ্ন আব্দুস সাত্তার মাস্টারের বাসায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনিকার খালোতো বোন অর্পার সঙ্গে পরিচয় হয় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার শাহজাহান কিবরিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিনের।

অর্পাকে তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক দিন ধরে মোবাইল ফোনে তার মাকে অনুরোধ করেন ফারদিন। কিন্তু অর্পার মা পাপিয়া আক্তার বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না।
আনিকার পরিবারের সদস্যদের দাবি, ৪ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে কুলাউড়া থেকে মনোহরদী অর্পার বাসায় আসে শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিন। ওই সময় অর্পা বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং ক্লাস করতে নরসিংদী ছিলেন।

বাসায় ছিলেন অর্পার মা পাপিয়া এবং খালাতো বোন সামিয়া আলম আনিকা। দুপুরে রান্না করে ফারদিনকে খাওয়া-দাওয়া করানো হয়। পরে বিশ্রাম শেষে পৌনে ৪ টার দিকে অর্পাকে বিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ফারদিনের। এক পর্যায়ে ফারদিনের ব্যাগে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে পাপিয়াকে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। তাঁর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা আনিকা তার খালাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে।

এ সময় তাকেও উপর্যুপরি কোপানো হয়,চাপাতির কোপে গলা কেটে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই আনিকার মৃত্যু হয়। পরে পাপিয়া বাসা থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এসময় হত্যাকারী ফারদিন পালিয়ে যায়। পরে পাপিয়াকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।