সারাদেশে ৫৬ টি জেলায় ৯৪৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হতে যাচ্ছে।
সারা দেশের প্রায় ১ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ৫০–এর কম শিক্ষার্থী রয়েছে এমন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খসড়া তালিকা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিপিই মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত।
তিনি বলেন, ‘অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০–এর কম। কম শিক্ষার্থী থাকা কাছাকাছি অবস্থিত বিদ্যালয়গুলো একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এ উদ্যোগটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সরকারি অর্থ অপচয় রোধ এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয় একীভূত হলেও কোনো শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হবে না। একীভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্য বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হবে।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ৫৬টি জেলার ৯৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ৫০–এর কম শিক্ষার্থী নিয়ে। এ তালিকার বেশির ভাগই জাতীয়করণ করা বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ থেকে ৩০ জন। কোথাও কাগজে–কলমে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৩ থেকে ১৪ জন হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীদের বেতন ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ প্রতি মাসে সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয় হয়।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর ৫০–এর কম শিক্ষার্থী থাকা বিদ্যালয়কে কীভাবে বা কোন উপায়ে একত্রিত করা যায় এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়ে অফিস আদেশ জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
অফিস আদেশে বলা হয়, সারা দেশে ৫৬ জেলায় ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী বিশিষ্ট ৯৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় কীভাবে বা কোন প্রক্রিয়ায় একত্রীকরণ করা সম্ভব এবং পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না থাকা জাতীয়করণ করা বিদ্যালয়গুলো আর না চালানোর বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
চিঠিতে একীভূত করার জন্য প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ের নাম, ছাত্রসংখ্যা, জমির পরিমাণ, যে স্কুলের সঙ্গে একীভূত করা হবে সেটির নাম, বর্তমান বিদ্যালয় থেকে একীভূত করার জন্য প্রস্তাবিত স্কুলের দূরত্ব, প্রস্তাবিত স্কুলের ছাত্র–ছাত্রী সংখ্যার তথ্য পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানা যায়, ২০২২ সালে সারা দেশের একাধিক বিদ্যালয় সরেজমিন পরিদর্শন করে সরকারি স্থাপনা থাকলেও পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান। তিনি ৫০–এর কম শিক্ষার্থী থাকা বিদ্যালয়গুলোকে কাছাকাছি দূরত্বের বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নেন।