রাজশাহীর বাঘায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার চুরিতে বাড়ছে আতংক

জুয়েল আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি বাংলাদেশঃ রাজশাহীর বাঘায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার চুরিতে বাড়ছে আতংক। চুরি যাওয়া মিটার পেতে চোরের চিরকুটে রেখে যাওয়া বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠালেই তা পাওয়া যাচ্ছে। আর যেসব এলাকায় মিটার চুরি হয়েছে, সেখানে পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে যাওয়া চিরকুটে একটাই বিকাশ নম্বর (০১৮৫৬-৬৬৫৪৯২) ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ৭জন চাল কলের (রাইচ মিল) মালিক চোরের চিরকুটে রেখে যাওয়া বিকাশ নম্বরে যেগাযোগ করে, ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা পাঠিয়ে তাদের মিটার ফেরত পেয়েছেন।মালিকরা জানান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশপাশের ঝোপ জংগলে সেই মিটার রাখা ছিল। টাকা দিয়ে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেলেও সংযোগের জন্য পল্লী বিদুৎ অফিসেও টাকা জমা দিতে হয়েছে।জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) একই রাতে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মনিগ্রাম বাজারের সেলিম রাইচ মিল, মনিগ্রাম মাদ্রাসা মোড়ের নান্টু রাইচ মিল ও তুলশীপুর খেরুর মোড় এলাকার ইমরান রাইচ মিল ও সরদার রাইচ মিলের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে চোরেরা। চুরি যাওয়া মিটার যেখানে বসানো ছিল, সেই জায়গায় পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে বিকাশ নম্বর (০১৮৫৬-৬৬৫৪৯২) দেওয়া ছিল। মিটার ফেরত পেতে সেই বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়।এর আগে, উপজেলার দিঘা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ,বাউসার খাতের সাধুর মোড় থেকে জাফর আলীর ও খাগড়বাড়িয়া গ্রামের মাসুদ আলীর চাল কল থেকে চোরেরা একইভাবে মিটার চুরি করে নিয়ে যায়। সেখানেও পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে যাওয়া চিরকুটে একই বিকাশ নম্বর (০১৮৫৬-৬৬৫৪৯২) ব্যবহার করা হয়েছে।চাল কলের মালিক সেলিম হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার (৩১শে ডিসেম্বর) একই রাতে তার সহ ৪জনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মিটার চুরি হয়ে যায়। পরদিন চিরকুটে রেখে যাওয়া বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করলে তাকে বলা হয়, ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠালে মিটার ফেরত দিব। পরে দরকষাকষি করে ৭০০০ (সাত) হাজার টাকা তাদের রেখে যাওয়া বিকাশ নম্বরে পাঠান। টাকা পেয়ে আমাকে জানায়, মিল থেকে সামান্য দূরে এক জঙ্গলে মিটারটি রাখা আছে। পরে সেখানে গিয়ে মিটারটি উদ্ধার করেন।
আরেক মালিক বাবুল আক্তার নান্টু বলেন, সকালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাল কল চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। পরে দেখেন মিটার নাই, সেখানে পলিথিন মোড়ানো রয়েছে। সেই পলিথিন খুলে দেখেন, চিরকুটে মোবাইল নম্বর সহ লিখা ছিল ওই মোবাইল নম্বরে বিকাশে টাকা দিলে মিটার ফেরত দেয়া হবে। বিষয়টি পল্লী বিদুৎ অফিসকে জানালে থানায় অভিযোগ করতে বলেন। পরে পল্লী বিদুৎ অফিসের লোকজন মেইন লাইন থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে বিকাল নম্বরে টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত পান। মিটার সংযোগের জন্যও বিদুৎ অফিসে টাকা জমা দিয়ে সংযোগ নিয়েছেন। একইভাবে অন্যদের মিটার চুরি করে নিয়ে গেছে।দিঘা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, ১৯ ডিসেম্বর তার চাল কলের মিটার চুরি হয়ে যায়। পরে দরকষাকাষি করে বিকাশ নম্বরে (০১৮৫৬-৬৬৫৪৯২) ৬ (ছয়) হাজার টাকা পাঠানোর ৮দিন পর তাদের দেওয়া তথ্য মতে স্থানীয় এক জংগলে মিটার পান। পরে বিদুৎ অফিসে ১১০৪ (এক হাজার চার) টাকা জমা দিয়ে সংযোগ নিয়েছেন।
বাঘা জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, মিটার চুরির বিষয়টি জানানোর পর থানায় অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। পরে গ্রাহকরা চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেলে সংযোগ দেওয়া হয়। গ্রাহককে এই বিষয়ে সচেতন হতে বলা হয়েছে।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে মিটার চুরির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। তবে যে বিকাল নম্বরে টাকা নিচ্ছে সেই সিমের রেজিষ্টেশন না থাকার কারণে সনাক্ত করা যাচ্ছেনা। যেহেতু চুরি যাওয়া মিটার ঝোপ জংগলে রেখে যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে আগে টাকা না পাঠিয়ে আশপাশের ঝোপ জংগলে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শসহ মিটার প্রেটেকশনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।