মদন-ফতেপুর সড়কের কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার, চরম ভোগান্তিতে অর্ধলাখ মানুষ

মোঃ রাসেল আহমেদ, মদন উপজেলা প্রতিনিধি |

নেত্রকোনা জেলার মদন থেকে ফতেপুরগামী গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির উন্নয়ন কাজ ফেলে রেখে উধাও হয়ে গেছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান “ইউনুস ব্রাদার্স”। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ অঞ্চলের অন্তত অর্ধলাখ মানুষ।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৩ কিলোমিটারের উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয় ইউনুস ব্রাদার্সকে। এ কাজের মোট বরাদ্দ ছিল প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কাজটি শুরু হয় ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, আর শেষ হওয়ার কথা ছিল ৫ জুন ২০২৫। কিন্তু শুরুতেই সামান্য কিছু কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি উধাও হয়ে যায়।

কাজ ফেলে রেখে চলে যাওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী বিষয়টি জানালে, নেত্রকোনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটিকে ২৮ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তিনি জানান, “ঠিকাদার যদি সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।”

সড়কের দুরাবস্থা চরমে

বর্তমানে সড়কের অবস্থান বেহাল। ধুলাবালি, গর্ত ও ভাঙাচোরা অংশে যান চলাচল দুরূহ হয়ে পড়েছে। ভারী যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ। সড়কে থাকা ৪টি সেতুর মধ্যে দুটির স্ক্যাব ভেঙে গেছে, যা বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। ফলে ২৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের কৃষি, ব্যবসা ও জরুরি চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।

জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের উদ্বেগ

এ বিষয়ে উত্তর ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার শফি জানান, “১৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৩ কিলোমিটারে কাজ শুরু হয়েছিল, মানুষ আশাবাদী হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা জানি না কেন।” তিনি দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান।

উপজেলা প্রকৌশলী এস. এম. শাহদাত হোসেন বলেন, “ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কাজ করে আর কাজ করেনি। ফলে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। আমরা বিষয়টি জেলা অফিসকে জানিয়েছি।”

নেত্রকোনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, “কাজ ফেলে চলে যাওয়ার বিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে প্রতিষ্ঠান বাতিল করে নতুন ঠিকাদার দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হবে।”

কোনো তথ্য নেই ঠিকাদারের

কার্য এলাকায় কোনো সাইনবোর্ড নেই। এমনকি উপজেলা প্রকৌশল অফিসে যোগাযোগ করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়দের দাবি

স্থানীয়রা জানান, সড়কটি এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত সংস্কার না হলে এটি যান চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়বে। তারা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।