বেইজিংয়ে “BCYSA ইয়ুথ ডায়লগ বেইজিং চ্যাপ্টার” অনুষ্ঠিত

মাসুদ রানা জামালপুর জেলা প্রতিনিধি

গত ১৯শে জুন রোজ বৃহস্পতিবার চায়নার রাজধানী বেইজিংয়ে অবস্থিত পাঞ্জাবি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (BCYSA)-এর আয়োজনে “BCYSA ইয়ুথ ডায়লগ – বেইজিং চ্যাপ্টার”।
অনুষ্ঠানে চীন সরকার কর্তৃক আমন্ত্রিত বাংলাদেশি ইয়ুথ লিডারদের সাথে বেইজিংয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে চায়নার অভিজ্ঞতা কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে একটি উন্মুক্ত আলোচনা করেন।
আলোচনা সভায় উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুজ্জামান, পিএইচডি গবেষক, নিউরো রিহ্যাবিলিটেশন, ক্যাপিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বেইজিং।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জান্নাতুল আরিফ, পিএইচডি গবেষক, নর্থ চায়না ইলেকট্রিক পাওয়ার ইউনিভার্সিটি, বেইজিং।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সভাপতি উপস্থিত সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। বাংলাদেশ থেকে চায়না সরকারের আমন্ত্রণে আগত প্রায় ২৪ জন অতিথি এতে অংশগ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ গণমাধ্যমকর্মীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
BCYSA -এর সাধারণ সম্পাদক- চায়নায় BCYSA এর বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে সবার সামনে তুলে ধরেন। এরপর ইয়ুথ লিডারদের বক্তব্য পর্ব শুরু হয়।
প্রথম বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোঃ হারুনুর রশিদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি চায়নার শিক্ষা অবকাঠামো, পাঠদান প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেন।
এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন: নূর আহমেদ, রিসার্চ অফিসার, BISS, দেলোয়ার হোসাইন, সেন্ট্রাল মেম্বার, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, রাসেল মিয়া, জয়েন্ট সেক্রেটরি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাংলাদেশ।
BCYSA-এর সাবেক জয়েন্ট সেক্রেটারি মইনুদ্দিন তৌহিদ হেলালী তার বক্তব্যে চায়নার শিক্ষাব্যবস্থায় পয়েন্ট ভিত্তিক মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানের পদ্ধতি তুলে ধরেন।
শিমুল চন্দ্র সরকার, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি, BCYSA – তিনি চায়নার কৃষি খাতের গবেষণা এবং বাংলাদেশের শিক্ষা পরিবেশে চায়না কিভাবে উপকার করতে পারে তা নিয়ে কথা বলেন।
মোঃ মাহাবুবুর রহমান, জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন – তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও স্বকীয়তা রক্ষা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নুরুল ইসলাম, জেনারেল সেক্রেটারি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির – প্রবাসী শিক্ষার্থীদের অর্জিত জ্ঞান দেশ গঠনে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান এবং সবাইকে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।

মাহমুদ হোসাইন তোফিক, মেম্বার, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি – চায়নার বিনিয়োগ পরিবেশ, উন্নয়নধারা ও সম্ভাবনার দিকগুলো উপস্থাপন করেন।
এ. এ. এম. ইয়াহিয়া, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল – ছাত্রসমাজের ভূমিকাকে গুরুত্ব দেন এবং প্রবাসী শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের বাংলাদেশ বিনির্মাণে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
ড. মোঃ রকিবুল হক, প্রফেসর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় – প্রবাসে বাংলাদেশিদের এ মিলনমেলায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আকর্ষণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও সক্ষমতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
বক্তব্য রাখেন BCYSA-এর উপদেষ্টা ও পাঞ্জাবি রেস্টুরেন্টের সত্ত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শামসুল হক। তিনি চায়নার আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি জান্নাতুল আরিফ
তিনি বাংলাদেশের পুনর্গঠনে ইয়ুথ লিডারদের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করে বলেন—
“গন অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই গৌরব যেন বৃথা না যায়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে।”
অনুষ্ঠানের শেষে চা-চক্র ও সম্মিলিত ছবি তোলার মাধ্যমে আয়োজনের সফল সমাপ্তি ঘটে।